আন্তর্জাতিক নারী দিবস
পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম

সমাজের সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন পিছিয়ে পড়া নারীরা। সরকার ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করলেও পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হয়নি। তবে কিছু বেসরকারি সংগঠন এখনও এ বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ ‘কন্যা, জায়া, জননী: অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন’প্রতিপাদ্যে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হচ্ছে।
পিছিয়ে পড়া নারীদের বাস্তবতা
প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকার রক্ষায় ২০০৭ সাল থেকে কাজ করছে উইমেন ইউথ ডিজঅ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী নারীরাই সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার।’
দলিত নারী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মণি রানী দাস ও কাপেং ফাউন্ডেশন নারী নেটওয়ার্কের সদস্যসচিব ফালগুনী ত্রিপুরা জানান, পিছিয়ে পড়া নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ খুবই সীমিত। উপরন্তু স্বাস্থ্য, যৌন সহিংসতা, সম্পত্তির অধিকার ও বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা ব্যাপকভাবে অবহেলিত।
বয়স্ক নারীদের অবস্থা
গাজীপুরের বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা গেছে, সেখানে ৭৫ জন ৬০ বছরের বেশি বয়সী নারী রয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘আমাদের দেশে পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন থাকলেও এটি প্রবীণ নারীদের পরিবারের সঙ্গে শেষ সময় কাটানোর নিশ্চয়তা দিতে পারছে না।’
পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষকদের মতামত
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে ৩৮ লাখের বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বাস করেন, তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি, যার অর্ধেকই নারী।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকারি ভাতার পরিমাণ অনেক কম। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটি বৃদ্ধি করা জরুরি।’
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও অর্থনৈতিক সহায়তার ওপর জোর দিতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার বাণী
নারী দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নারীদের সম্ভাবনা ও দক্ষতাকে উৎপাদনমুখী কাজে যুক্ত করে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।'
দিবসের কর্মসূচি
নারী দিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে সভা, সেমিনার, মানববন্ধন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকালে মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করবে, আর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মূল আয়োজন করবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।