ডিসি সম্মেলন শুরু আজ, উঠছে ৩৫৪ প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৭ এএম

ফাইল ছবি
তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। এটি চলবে আগামী বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। এবার সম্মেলনে ৩৫৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনই থাকছে সম্মেলনের প্রধান ভেন্যু, যেমনটি ছিল গত বছরও।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে তিনি মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন। এরপর সন্ধ্যায় তিনি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভায় মিলিত হবেন এবং রাতে নৈশভোজে অংশ নেবেন।
শনিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ জানান, গত বছর ডিসি সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন হার তুলনামূলকভাবে কম ছিল। ২০২৪ সালের সম্মেলনে নেওয়া ৩৮১টি সিদ্ধান্তের মধ্যে মাত্র ৪৬ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে, যা ১৭৭টি সিদ্ধান্তের সমান। অবশিষ্ট ২০৪টি সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
এবারের সম্মেলনে মোট ৩০টি কার্য-অধিবেশন এবং চারটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ অধিবেশনগুলোর মধ্যে থাকছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মুক্ত আলোচনা এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এবার জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ৩৫৪টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, যা এক হাজার ২৪৫টি প্রস্তাবের মধ্যে বাছাই করা হয়েছে। জনসেবা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটনের প্রসার, আইন ও বিধিমালার সংশোধন এবং জনদুর্ভোগ লাঘবের মতো বিষয়গুলো বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়েছে। সর্বাধিক প্রস্তাব এসেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে, যার সংখ্যা ২৮টি।
এবারের আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, তথ্য ও প্রযুক্তির প্রয়োগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সমন্বয়।
এবারের সম্মেলনে ডিসিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন না। কারণ হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, রাষ্ট্রপতির ব্যস্ত সময়সূচির সঙ্গে এটি সমন্বয় করা সম্ভব হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের চেতনা সামনে রেখে ডিসিদের বার্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উদ্বোধনী অধিবেশনেই একটি বিশেষ ভিডিও প্রদর্শিত হবে, যেখানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট ও ফলাফল তুলে ধরা হবে। এছাড়া বিপ্লবোত্তর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হবে।
প্রতি বছর জেলা প্রশাসক সম্মেলন আয়োজিত হয়, যাতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তবে চলতি বছর, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আয়োজিত হওয়ায় এই সম্মেলনের তাৎপর্য আরও বেড়ে গেছে।