অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু : প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৪ পিএম

বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
সংলাপের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায়ের পথচলা শুরু হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন রয়েছে। এই পর্বটি আগামী ছয় মাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে তিনি এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই, তার সঙ্গে পুরো দেশ ও বিশ্ব রয়েছে। আজকের সংলাপের মাধ্যমে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ইনিংস বা অধ্যায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং এই সংলাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা হলো। তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের চালানো নৃশংসতার তথ্য জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, যা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হতে পারে।
বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থসহ আরও অনেকে।
গত বুধবার অন্তর্বর্তী সরকার একটি সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে, যার দায়িত্ব দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারকে ত্বরান্বিত করা।
কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন:
সভাপতি: অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (প্রধান উপদেষ্টা)। সহ-সভাপতি: অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ (সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান)।
কমিশনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা হলেন:
আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী (জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান), সফর রাজ হোসেন (পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান), ড. বদিউল আলম মজুমদার (নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান), বিচারপতি এমদাদুল হক (বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান), ড. ইফতেখারুজ্জামান (দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান)।
এই সংলাপের মূল লক্ষ্য হল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কার এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি। অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা বাড়িয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, আজকের সংলাপ নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করবে। আগামী ছয় মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই সময়েই নির্ধারিত হবে, আমরা কেমন বাংলাদেশ চাই।
এই ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথচলা কেমন হবে, তা নির্ধারণ হবে আসন্ন মাসগুলোতে।