‘সীমান্ত হত্যা বন্ধের বার্তা দিতে বিজয় দিবসে ফেলানী অ্যাভিনিউ উদ্বোধন’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানীর স্মৃতিকে অম্লান রাখা এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধের জোরালো দাবি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ফেলানীর নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। এমন মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) গুলশান-২ গোলচত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটির নামফলক উন্মোচন করা হয়। নতুন নাম দেওয়া হয় ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আদিলুর রহমান খান বলেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় ফেলানীর মৃত্যু বাংলাদেশের মানুষকে যেমন ব্যথিত করেছে, তেমনি বিশ্ব বিবেককেও নাড়া দিয়েছে। তিনি বলেন, ফেলানীর ওপর যে নিষ্ঠুরতা চালানো হয়েছিল, সেটি প্রতিদিন দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্মরণ করিয়ে দিতেই এই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা বন্ধের বিষয়ে দেশের মানুষের সর্বজনীন আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববাসীর কাছে সীমান্ত হত্যার মতো একটি জঘন্য মানবিক সংকটের বার্তা তুলে ধরাও এর উদ্দেশ্য।
উপদেষ্টা জানান, বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মহান বিজয় দিবসে ফেলানীর নামে সড়ক উদ্বোধন সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের একটি প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ফেলানী হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি একটি স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাঁর মতে, এই নামকরণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তভাবে তুলে ধরবে।
নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম এবং ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠান শেষে ডিএনসিসি মসজিদের ইমাম মাওলানা আনসার উল করিম ফেলানীর আত্মার শান্তি কামনা এবং দেশের সীমান্ত সুরক্ষার জন্য দোয়া পরিচালনা করেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ১৪ বছরের কিশোরী ফেলানী। তার মরদেহ দীর্ঘ সময় কাঁটাতারে ঝুলে থাকার ছবি দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।



