Logo
Logo
×

জাতীয়

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন হবে ৯০ হাজার সেনাসদস্য

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০১:২৮ পিএম

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন হবে ৯০ হাজার সেনাসদস্য

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল ঘোষণার প্রথম দিন থেকেই আচরণবিধি প্রতিপালন, অস্ত্রবাজদের ওপর কড়া নজরদারি এবং অপতথ্য মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ—সবকিছুই থাকবে কঠোর পর্যবেক্ষণে।

বৃহস্পতিবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে দেশের বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ সভায় এ সিদ্ধান্ত জানায় ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্র সচিব, ইসি সচিবসহ বিভিন্ন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সভা শেষে ইসির নিরাপত্তা-পরিকল্পনার সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন সংস্থাটির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

জানানো হয়, দুটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার থেকে শুরু করে প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিল, পোস্টার অপসারণ, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার সহায়তা, সিসিটিভি স্থাপন ও লাইভ মনিটরিং, ড্রোন নিষিদ্ধকরণ, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, পোস্টাল ভোটিং, এবং অপতথ্য প্রতিরোধ—মোট ২৩টি বিষয়ে গভীর আলোচনা হয়েছে।

ইসির ভাষায়, এসবই নিরাপদ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাস্তবায়নের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।

সভায় জানানো হয়, ভোটকেন্দ্র থেকে পুরো নির্বাচনি এলাকা পর্যন্ত তিন স্তরের নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তোলা হবে— প্রথম স্তর: প্রতিটি কেন্দ্রে স্থায়ীভাবে নিয়োজিত স্ট্রাইকিং ফোর্স। দ্বিতীয় স্তর: কেন্দ্র ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় টহলরত মোবাইল ফোর্স। তৃতীয় স্তর: সম্ভাব্য ঝুঁকি বা সহিংসতায় দ্রুত হস্তক্ষেপকারী সেন্ট্রাল রিজার্ভ ফোর্স।

আগে থেকেই নির্বাচনি এলাকা রেড, ইয়েলো এবং গ্রিন—এই তিন ভাগে ভাগ করে মোতায়েন কৌশল নির্ধারণে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সিইসি।

তফসিল ঘোষণার পরই আচরণবিধি প্রতিপালনে সর্বোচ্চ কঠোরতা দেখানো হবে বলে জানায় ইসি। রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা সমর্থক—সবার জন্য সমান মানদণ্ড। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও রাজনৈতিক প্রভাব ও সুবিধা গ্রহণ থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা অবহেলার ক্ষেত্রেও ‘জিরো টলারেন্স’ প্রয়োগ হবে।

প্রায় ১৩ কোটি ভোটারের জন্য ৪৩ হাজার কেন্দ্রে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি ভোটকক্ষ থাকবে। এ বিশাল কাঠামোর নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে ৭ লাখের বেশি সদস্য— আনসার-ভিডিপি: সাড়ে ৫ লাখের লাখের বেশি, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা সংস্থা: সমন্বিতভাবে, সেনাবাহিনী: ৯০ হাজারের বেশি সদস্য টানা ১৭ দিন মাঠে; তারা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং উভয় ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এই ইউনিট।

ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে অপতথ্য, গুজব ও ভয়েস ক্লোন প্রযুক্তি প্রতিরোধে সাইবার সিকিউরিটি সেল এবং কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়, সিআইডি, এনটিএমসি, ইউএনডিপির প্ল্যাটফর্ম—সবকিছুর সমন্বিত সক্ষমতা ব্যবহার করা হবে।

ইসি জানায়, ‘ভালো তথ্য’ দ্রুত ছড়িয়ে দিতে বিশেষ কাঠামো তৈরি হচ্ছে। শনাক্ত সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী ও নাশকতাকারীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজন হলে সীমান্ত ও সমুদ্রপথও সিল করে দেওয়া হবে।

প্রতি ভোটকেন্দ্রে ১৩ জন করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন পর্যন্ত নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন থাকবে। আনসার, পুলিশ, মোবাইল টিম থেকে শুরু করে রিজার্ভ ফোর্স—সবাই থাকবে এই বলয়ে। পোস্টাল ভোটিং থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার বাসস্থান পর্যন্ত নজরদারিও জোরদার করা হবে।

সভায় ইসির প্রত্যাশা—একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচন। আর সে লক্ষ্যেই মাঠে নামছে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ ও সমন্বিত নিরাপত্তা কাঠামো।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন