বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ শিল্পে ৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বাপি) জানিয়েছে, শীর্ষ ৪৫টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও ভ্যাকসিনসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাপির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, “১৮ অক্টোবরের অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মীভূত হয়েছে। এই ক্ষতি পুরো খাতকে ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে।”
তিনি জানান, দেশে ৩০৭টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২৫০টি সক্রিয়ভাবে উৎপাদন করছে। প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী, শুধু শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানিরই ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি যুক্ত হলে মোট অর্থনৈতিক প্রভাব প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।
পুড়ে যাওয়া কাঁচামালের মধ্যে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যান্সার জাতীয় ওষুধ তৈরির উপকরণ। কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পুনরায় আমদানি করা সময়সাপেক্ষ। ফলে উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটবে।
ডা. জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের তৈরি ওষুধ বর্তমানে ১৬০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হয়। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে উৎপাদন চেইনে বড় ধাক্কা লাগবে। তিনি আরও জানান, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশই চীন, ভারত ও ইউরোপ থেকে আকাশপথে আমদানি করা হয়। কার্গো ভিলেজে আগুন লাগায় এসব মূল্যবান উপকরণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদনপ্রাপ্ত পণ্য পুনরায় আমদানির ক্ষেত্রে জটিলতা ও সময়ক্ষেপণের আশঙ্কাও তুলে ধরেন তিনি। “একটি র-ম্যাটেরিয়াল হারালে সেই উপকরণে নির্ভরশীল প্রতিটি ফিনিশড প্রোডাক্টের উৎপাদনই অনিশ্চয়তায় পড়ে,”— বলেন ডা. জাকির।
তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি দ্রুত তদন্ত, ক্ষতিপূরণ এবং বিকল্প কার্গো ব্যবস্থাপনা জোরদার করার আহ্বান জানান।



