শাহজালাল বিমানবন্দরে ১২ বছরে আটবার অগ্নিকাণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৬ পিএম
দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গত ১২ বছরে অন্তত আটবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেঁপে উঠেছে। সাম্প্রতিক আগুনের ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
সবশেষ শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রায় সাত ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ থাকে সাত ঘণ্টা। যদিও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে কার্গোতে থাকা সব আমদানি পণ্য পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষতির পরিমাণ কয়েক শ কোটি টাকার বেশি, কেউ কেউ বলছেন হাজার কোটি টাকারও বেশি।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন নেভাতে রিমোট কন্ট্রোল ফায়ার ফাইটিং রোবট ব্যবহার করা হয়। তবু আগুনের ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগে।
পেছনে ফিরে তাকালে দেখা যায়, গত এক দশকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একাধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে—
২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর: নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে আগুন ধরে যায়। প্রায় ৪০ মিনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
২০১৮ সালে: বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের ছাদে শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগে। যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়।
২০১৭ সালের ১১ আগস্ট: বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনালের তৃতীয় তলায় এয়ার ইন্ডিয়ার অফিসে আগুন লাগে। ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্ট জানা যায়নি।
২০১৬ সালে: রিজেন্ট এয়ারওয়েজের বিমানে উড্ডয়নের ঠিক আগে আগুন লাগে। ১১৬ জন যাত্রী ও ক্রু নিরাপদে উদ্ধার হন।
২০১৫ সালে: ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসে বৈদ্যুতিক ত্রুটিতে আগুন লাগে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
২০১৩ সালের ৫ এপ্রিল: কার্গো সেকশনের কুরিয়ার গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট টানা দুই ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
২০১৩ সালেই: বিমানবন্দরের স্পাইসি রেস্তোরাঁয় আরেকটি আগুন লাগে, কর্মচারীরা নিজেরাই তা নিভিয়ে ফেলেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এত ঘনঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিমানবন্দরের বৈদ্যুতিক ও অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়ন করা জরুরি।



