Logo
Logo
×

জাতীয়

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ অর্থনৈতিক জাল

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৬ পিএম

কারাগারের ভেতরে ‘অদৃশ্য’ অর্থনৈতিক জাল

ছবি : সংগৃহীত

কারাগারের ভেতরে গড়ে উঠেছে ‘অদৃশ্য’ এক অর্থনৈতিক জাল। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বন্দীদের স্বজনদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নিচ্ছেন কিছু কারারক্ষী। বিনিময়ে বন্দীরা পাচ্ছেন মোবাইল ফোন ব্যবহার, মাদকসেবন, বাইরের খাবার আনা কিংবা হাসপাতালের ওয়ার্ডে থাকার মতো নানা সুবিধা। যদিও অভিযোগে জড়িয়ে কেউ কেউ ধরা পড়ছেন, তবুও থামছে না এই অবৈধ লেনদেন।

কারা অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে জানা গেছে, কারারক্ষীরা নিজের বা আত্মীয়-পরিজনের নামে থাকা নগদ, বিকাশসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর বন্দীর স্বজনদের দেন। এসব নম্বরে নিয়মিত ঢুকছে হাজার হাজার টাকা। সেবা দেওয়ার বিনিময়ে রক্ষীরা পান কমিশন।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের রক্ষী আব্দুল কাদের এক বন্দীর স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিলেও প্রতিশ্রুত সুবিধা দেননি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বদলি করা হয়। জেলার মো. আব্দুল্ল্যাহেল আল-আমিন জানান, অভিযোগ পেলেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কারাগারে বন্দীদের প্রয়োজনে অর্থ রাখার জন্য অনুমোদিত পিসি (ব্যক্তিগত তহবিল) কার্ড রয়েছে। স্বজনেরা মানি অর্ডার, মোবাইল ব্যাংকিং বা সরাসরি প্রধান রক্ষীর মাধ্যমে এই কার্ডে অর্থ জমা দিতে পারেন। কিন্তু এর বাইরে কারারক্ষীদের ব্যক্তিগত নম্বরে অর্থ পাঠানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কারাসূত্র বলছে, অর্থের বিনিময়ে বন্দীদের বিশেষ খাবার, হাসপাতালের ওয়ার্ডে স্থানান্তর, এমনকি মাদক বাণিজ্যের অর্থ লেনদেনও হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। গত ৫ মার্চ খুলনা কারাগারে তল্লাশিতে এক বন্দীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও চার্জার উদ্ধার হলে সংশ্লিষ্ট ফ্যাক্টরি ওভারসিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়। একইভাবে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের রক্ষী বদরুজ্জামান শিকদারও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন,

কারাগার সংশোধনের স্থান হলেও ঘুষের বিনিময়ে নিয়ম ভাঙা এখন স্বাভাবিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ বন্দীরা, যাদের পক্ষে অর্থ দেওয়া সম্ভব নয়। ঘুষচক্র ঠেকাতে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি, আর্থিক লেনদেনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন।

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন জানান, অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন রক্ষীকে বরখাস্ত ও বদলি করা হয়েছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন