
প্রিন্ট: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
হাসনাতের পোস্ট : আরেক প্রতারক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ০২:৪০ পিএম

ছবি - আটক প্রতারক সোহাগ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির কথিত অভিযোগ তোলা আরও এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) এক অভিযানে সোহাগ পাটোয়ারী নামের ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করে সংস্থাটির একটি টিম। লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা সোহাগ ঢাকার দক্ষিণ মান্ডা থেকে প্রতারণা কার্যক্রম চালাতেন বলে দুদক সূত্রে জানা যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, দুদক হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্ট আমলে নিয়ে ঘটনাটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মরত একজন পরিচালকের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করে চক্রের হোতা সেলিমসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে, রোববার (২৯ জুন) চার প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন পিরোজপুরের মো. সেলিম (৪০), বাগেরহাটের মো. তরিকুল ইসলাম (৪০), ঢাকার মো. আতিক (৩৮), নোয়াখালীর মো. আব্দুল হাই সোহাগ (৩৫)।
গ্রেপ্তারের সময় আসামিদের কাছ থেকে একটি সনি ডিজিটাল এইচডি ক্যামেরা, বুম মাইক্রোফোন, সেলফি স্টিক, দুটি পাসপোর্ট, সমকাল পত্রিকার একটি আইডি কার্ড, সমকাল, এশিয়ান টিভি ও এফসি টিভিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভিজিটিং কার্ড (যেগুলোতে সোহাগ পাটোয়ারী নাম ব্যবহার করা হয়েছিল), সোনালী ব্যাংকের একটি চেকবই, ছয়টি মোবাইল ফোন এবং ১৩টি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।
প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের দুদকের চেয়ারম্যান, মহাপরিচালক বা কর্মকর্তার পরিচয়ে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মামলার নিষ্পত্তির নামে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। চক্রটি গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দুদকের নজরে আসে। তারা একটি নির্দিষ্ট ফেসবুক গ্রুপ খুলে এবং মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। সেই সময় থেকেই চক্রটিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে কাজ চলছিল।
গত ২৪ জুন হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন এবং এর সঙ্গে একটি অডিও যুক্ত করেন। রাত ১০টার দিকে দেওয়া ওই স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন- ‘আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা পয়সার অভাব থাকার কথা নয়, আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’
বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্ট কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। পোস্টটিতে তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়াই দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন। পরে পুরো বিষয়টি আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হয়।