BETA VERSION সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
Logo
ইউনিকোড কনভার্টার
Logo
  • হোম
  • সর্বশেষ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • সারাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • চাকরি
  • মিডিয়া

সব বিভাগ ভিডিও আর্কাইভ ইউনিকোড কনভার্টার
Logo

প্রিন্ট: ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম

Swapno

জাতীয়

করোনা ও ডেঙ্গুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিকুনগুনিয়াও

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ১০:৫৮ এএম

করোনা ও ডেঙ্গুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিকুনগুনিয়াও

ছবি -সংগৃহীত

আবদুর রহিম। থাকেন পুরান ঢাকায়। গত ১২ জুন থেকে চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয় তার। হালকা জ্বর ও হাড়গোড়ে ব্যথা। মুভ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। তিনদিন পর গত ১৫ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন, তিনি চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। চিকিৎসক নাপা এক্সটেন্ড ট্যাবলেটের পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।

রহিম বলেন, ‘জ্বর তেমন বেশি না। কতক্ষণ পর পর আসে-যায়। কিন্তু শরীরের এমন কোনো অঙ্গ নেই, যেখানে ব্যথা নেই। শরীর নাড়াচাড়া করা যায় না, এতই ব্যথা। ঈদের সময় তো নানান জায়গায় গিয়েছি। বিভিন্ন কাজ করতে হয়েছে। কোথা থেকে কীভাবে আক্রান্ত হয়েছি, বুঝতে পারিনি।’


রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা মমিন তালুকদার। বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড শরীর ব্যথা, হালকা জ্বর ও শরীরিক দুর্বলতায় ভুগছেন। হাঁটার শক্তিও পাচ্ছেন না। খুব দ্রুতই পরীক্ষা করিয়েছেন, রিপোর্ট নেগেটিভ আসছে। তবে চিকিৎসক চিকুনগুনিয়া ধরেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। তাকেও নাপা এক্সটেন্ড ও লিকুইড খাবার খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।

শুধু এরা দুজনই নন, এ বছর সারাদেশে এখন পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ জ্বরের রোগীর চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৫০ জনের চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়েছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) তাদের গবেষণায় জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকার ১৩ ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর বিস্তার সবচেয়ে বেশি। গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চালানো ‘মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে ২০২৫’ জরিপে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১৩টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের চেয়ে বেশি।
এর বাইরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং দেশের আরও ৮টি জেলায় ডেঙ্গু রোগের বাহকের কীটতাত্ত্বিক জরিপ সম্পন্ন করে আইইডিসিআর। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন ছাড়াও জরিপের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন এবং কুষ্টিয়া, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ঝিনাইদহ ও মাগুরা পৌরসভা এলাকায়। গবেষণার জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত এলাকাগুলোর ৩ হাজার ১৪৭টি বাসাবাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে মোট ৪৬৩টি বাসাবাড়িতে ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া গেছে। ৯৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টির বিভিন্ন এলাকায় ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। এই এলাকাগুলো ডেঙ্গুর উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ঝুঁকিতে থাকা ওয়ার্ডগুলো হলো- ১২, ২, ৮, ৩৪, ১৩, ২২ নম্বর ওয়ার্ড। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলো হলো- ৩১, ৪১, ৩, ৪৬, ৪৭, ৪, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। উভয় সিটিতেই এডিস মশার লার্ভা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে বহুতল ভবনে, যা ৫৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এছাড়া ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ নির্মাণাধীন ভবনে, একক বাড়িতে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, সেমিপাকা বাড়িতে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ফাঁকা স্থানে ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

সবচেয়ে বেশি এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে ফুলের টব ও ট্রেতে জমে থাকা পানিতে। জরিপে পাওয়া মোট লার্ভার ২৭ শতাংশই বসবাস করে এসব পানিতে। এছাড়া ২২ শতাংশ সিমেন্ট নির্মিত পানির ট্যাংকে, ২০ শতাংশ ফ্লোরে জমে থাকা পানিতে, ১৩ শতাংশ প্লাস্টিকের ড্রামে, ১১ শতাংশ লোহার পাইপে, ১০ শতাংশ প্লাস্টিকের পাত্রে এডিসের লার্ভা পেয়েছেন গবেষকেরা।

আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, ঢাকায় বহুতল ভবনে সবচেয়ে বেশি (৫৮ দশমকি ৮৮ শতাংশ) এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রধান বাহক এডিস অ্যাজিপ্টাই মশা এবং ঢাকার বাইরে এডিস অ্যালবোপিক্টাস নামক মশা এটি বেশি বহন করে।

জেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি মশার লার্ভা পাওয়া গেছে ঝিনাইদহ পৌরসভা এলাকায়। ২৭০টি বাসাবাড়িতে জরিপ পরিচালনা করে ১৬২টিতেই লার্ভার উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকেরা। এরপর মাগুরায় ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, পিরোজপুরে ২০ শতাংশ এবং পটুয়াখালীতে ১৯ দশমিক ২৬ শতাংশ এলাকায় মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।

অন্য এলাকাগুলোতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলেও তা তুলনামূলক কম। ঢাকা ও চট্টগ্রামে বহুতল ভবন এবং বাকি এলাকাগুলোতে একক বাসভবনের সব কটিতেই ৬০ শতাংশের বেশি মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

বরগুনায় ডেঙ্গুর ভয়াববহতার বিষয়ে অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, এই জেলায় খাবার পানির অসুবিধার জন্য প্রতিটি বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখে। কিন্তু অনেকে ঢেকে রাখে না। এজন্য মশা নিধনে বাড়ি মালিক সমিতিকে কাজে লাগাতে হবে। কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর হটস্পট চিহ্নিত হয়েছে সেখানে জোরালোভাবে ক্রাশ প্রোগ্রাম চালাতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্য স্টেক হোল্ডারদের সম্পৃক্ত করার সুপারিশও করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু হচ্ছে, চিকুনগুনিয়া হচ্ছে। মাঝেমধ্যে করোনাও শনাক্ত হচ্ছে। সবই তো ভাইরাস। এগুলোর দেশে কোনো চিকিৎসা নেই। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি জরুরি। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া হয় এডিস মশা থেকে। এটিকে গৃহপালিত মশা বলে। আপনার আমার ঘরেই এটির উৎপত্তি। ঘরেও হয়, ঘরের বাইরেও হয়।

‘যেখানেই জমা পানি থাকে, মশা ডিম পাড়ে। কোথাও যেন জমা পানি না থাকে। ফ্রিজের নিচে, এসির নিচে, ফুলের টব, ছাদ বাগান, ঘরের চারপাশ, এমনকি বাথরুমের কমোডেও পানি জমে থাকে। দেখা গেল বাথরুম ইউজ হয় না, ওখানকার জমা পানিতেও মশা ডিম পাড়ে। মশার কামড় থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে। এটা জরুরি। পাশাপাশি ঘরবাড়ি পরিষ্কার করতে হবে। বাচ্চাদের ফুল প্যান্ট পরিয়ে রাখা, ঘুমাতে গেলে দিনে ও রাতে মশারি টানানো, এগুলো নাগরিকদের দায়িত্ব’- বলেন ডা. আবদুল্লাহ।


যে কোনো ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা হলেই ডেঙ্গু ও করোনার নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। এক্ষেত্রে মোটেই অবহেলা বা দেরি করা যাবে না। লক্ষণ দেখা গেলেই পরীক্ষা করতে হবে। অনেকে সময় ক্ষেপণ করেন, দেখি, ভাইরাস জ্বর কিনা, এই-সেই বলেন। পরিস্থিতি জটিল হওয়ার পর ডাক্তারের কাছে যান, তখন কিন্তু সমস্যা হয়। কিন্তু আগে পরীক্ষা করলে আগেভাগেই জানা যায়। জটিলতাও এড়ানো সম্ভব হয়।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ৯২৬ জন। তাদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০ জন মারা গেছেন।

২০২৩ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৫৭৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত দেশে চার হাজার ৬৬০ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৩৮৭ জন। এসময়ে করোনায় মারা গেছেন সাতজন। ১৯ জুনের তথ্যে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায়ও দেশে নতুন করে ৩৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের দিন ১৮ জুনও শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২৮ জন।

করোনা ও ডেঙ্গু পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিকুনগুনিয়াও

এ সম্পর্কিত আরো খবর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সব খবর

সব খবর

আরো পড়ুন

Logo

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: jugerchinta24@gmail.com

আমাদের কথা যোগাযোগ শর্তাবলি ও নীতিমালা গোপনীয়তা নীতি বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা

অনুসরণ করুন

২০২৫ যুগের চিন্তা ২৪ কর্তৃক সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

ঠিকানা: ২১/বি (৫ম তলা), গার্ডেন রোড, পশ্চিম তেজতুরীবাজার, তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫ | যোগাযোগ: +৮৮০১৩৩৯৪০৯৮৩৯, +৮৮০১৩৩৯৪০৯৮৪০ | ই-মেইল: jugerchinta24@gmail.com