
প্রিন্ট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল শুনানি শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:০৯ পিএম

ফাইল ছবি
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টে খালাস পাওয়া সব আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতির আবেদন) শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি পরিচালনা করছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল জব্বার ভুঁইয়া ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এই রায় দেন, যা ১৯ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথকভাবে লিভ টু আপিল করে, যেগুলো গত ১৩ মার্চ চেম্বার আদালত থেকে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো ওই গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় নিহত হন ২৪ জন, আহত হন তিন শতাধিক। ওই ঘটনার পর মতিঝিল থানায় দুটি মামলা হয়—একটি হত্যা ও আরেকটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে।
প্রাথমিক অভিযোগপত্র ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেওয়া হয়। এরপর ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অধিকতর তদন্ত শেষে আরও ৩০ জনকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ জন। অন্য মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় আসামির সংখ্যা কমে ৪৯-এ দাঁড়ায়।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন ও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন:
লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, হুজি নেতা মুফতি হান্নান (পরবর্তীতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর), মাওলানা তাজউদ্দিন, এনএসআই-এর সাবেক ডিজি রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফসহ আরও অনেকে।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন:
তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজির একাধিক সদস্যসহ মোট ১৯ জন।
দুই বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন:
সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, খোদা বক্স চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, এটিএম আমিন, ডিএমপির সাবেক কর্মকর্তাসহ মোট ১১ জন।
হাইকোর্ট পরে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স বাতিল করে সব আসামির আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ এখন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লড়ছে।
বিচারপ্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ নির্ভর করছে চলমান লিভ টু আপিল শুনানির ওপর। এই শুনানি পর্যবেক্ষণ করছে পুরো জাতি।