ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ মিলে ছয়টি মরদেহ পুড়িয়ে দেন: আবজালুল
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুড়িয়ে মারা শহীদদের জন্য কিছু করতে না পারায় তাদের পরিবারসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন রাজসাক্ষী ও সাবেক এসআই শেখ আবজালুল হক।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এ জবানবন্দি শেষে তিনি এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এদিন আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার দায়ে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। বিচারিক প্যানেলের নেতৃত্ব দেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ।
২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে আবজালুল জানান, তিনি ঘটনাস্থলে না থাকলেও ১৫ আগস্ট অস্ত্র জমা দিতে এসে জানতে পারেন মরদেহ পোড়ানোর কথা। তার বক্তব্য অনুযায়ী, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ ছয়টি মরদেহে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। সবশেষে তিনি ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চান।
চলতি বছরের ২১ আগস্ট এ মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ওই সময় উপস্থিত আট আসামির সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে চান আবজালুল হক। আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করে।
এর আগে বিভিন্ন সাক্ষী আদালতে আশুলিয়ার হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী শাহরিয়ার হোসেন সজিব, আহত ভুক্তভোগী সানি মৃধা, নিহতদের পরিবার এবং পুলিশ কর্মকর্তারা সাক্ষ্য দিয়ে ঘটনার নৃশংসতা তুলে ধরেন।
প্রসিকিউশন গত ২ জুলাই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয়। এতে ৩১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র, ৬২ জন সাক্ষী, ১৬৮ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ এবং দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়।
এ মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি হলেন— ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজালুল হক ও কনস্টেবল মুকুল। তবে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন এখনো পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। একজন জীবিত থাকলেও তাকেও পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়।



