আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ এএম
জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৫তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ। এ মামলায় সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেলের সামনে আজকের সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। আজ দুইজন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগের দিন ১৬ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন মিঠাপুকুর থানার ওসি মো. নূরে আলম সিদ্দিক, যিনি ১৭ নম্বর সাক্ষী হিসেবে গত বছরের ১৬ জুলাইয়ের ঘটনাপর্ব বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তাকে জেরা করেন পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এবং উপস্থিত কয়েকজন আসামির আইনজীবীরা।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে রয়েছেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম, সাইমুম রেজা তালুকদার, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা।
গত কয়েক দিনে একে একে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা। ১৩ নভেম্বর জবানবন্দি দেন পুলিশের নায়েক আবু বকর সিদ্দিক। ১২ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন এসআই (সশস্ত্র) মো. আশরাফুল ইসলাম, যিনি জানান রংপুর কোতোয়ালি জোনের তৎকালীন এসি মো. আরিফুজ্জামান ও তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলামের নির্দেশে চালানো গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। ১১ নভেম্বর জবানবন্দি দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান আহমেদ। এর আগের দিন, ১০ নভেম্বর, সাক্ষ্য দেন জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বেরোবি শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান।
এ মামলায় আগে ৪ নভেম্বর, ২১ ও ১৩ অক্টোবর তিনবার সাক্ষী হাজির না হওয়ায় সময় পিছিয়েছিল। ৬ অক্টোবর নবম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দুই উপপরিদর্শক— এসআই রফিক ও এসআই রায়হানুল রাজ দুলাল—জবানবন্দি দেন। এরও আগে ২৮ আগস্ট প্রথম সাক্ষ্য দেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। একই দিন সাক্ষ্য দেন সাংবাদিক মঈনুল হক।
মামলার গ্রেপ্তার ছয় আসামি—এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ—উপস্থিতিতেই চলছে সাক্ষ্যগ্রহণ। বাকি ২৪ আসামি এখনও পলাতক। তাদের পক্ষে ২২ জুলাই রাষ্ট্রীয় খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মামলা বিচারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। ৩০ জুন অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় এবং ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে। মামলায় মোট সাক্ষী সংখ্যা ৬২ জন।



