Logo
Logo
×

আইন-আদালত

আমতলীর ওলামা লীগ সভাপতি মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

Icon

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

আমতলীর ওলামা লীগ সভাপতি মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

ছবি-যুগের চিন্তা

আমতলী উপজেলা ওলামা লীগ সভাপতি উত্তর কালামপুর (কালিবাড়ী) নুরানী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোঃ আলাউদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অনেত অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তার এমন কর্মকান্ডের শাস্তি দাবী করেছেন ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলার শাখারিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার ১৯৯২ সালে উপজেলার উত্তর কালামপুর নুরানী বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় সুপার পদে চাকুরী নেন। অভিযোগ রয়েছে চাকরী নিয়েই তিনি মাদ্রাসার অনিয়ম ও অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে মাদ্রাসায় উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ,নিয়োগ বাণিজ্য, কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব,প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন। 

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই পাল্টে যায় তার জীবন। বনে যান আমতলী উপজেলা ওলামা লীগ সভাপতি হিসেবে। সাবেক সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসায় শুরু করেন নিয়োগ বাণিজ্য। ভোকেশনাল শাখা না খুলেই মো. আব্দুল হক নামের একজনকে ৫ লাখ টাকার ঘুষ নিয়ে টেকনিক্যাল শপ এ্যাসিস্যান্ট পদে নিয়োগ দেন। অদ্য পর্যন্ত ওই মাদ্রাসায় ভোকেশনাল শাখা খোলা হয়নি । গত ১৬ বছরে তিনি অতিকষ্টে জীবন যাপন করছেন এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীর। 

২০২০ সালে হাফিজুর রহমান নামের একজনকে নৈশ প্রহরী পদে চাকরী দেয়ার কথা বলে সাড়ে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু তাকে চাকরী না দিয়ে মোটার অংকের টাকা নিয়ে অন্য একজনকে নিয়োগ দেন। এ নিয়ে মাদ্রাসায় সালিশ বৈঠক হয়। কিন্তু অদ্য পর্যন্ত তার টাকা ফেরত দেয়নি এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমানের। বারেক নামের একজনকে চাকরী দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে এভাবে কয়েকজনকে চাকরী দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। 

এছাড়াও শাখারিয়া এলাকায় মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার কাগজে কলমে ভুয়া এতিম খানা প্রতিষ্ঠা করেন। গত ১০ বছরে অন্তত ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। 

এছাড়াও আওয়ামীলীগ দোসরদের কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত করতে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে ভুয়া ভোটার তালিকা তৈরি করেছেন। এ বছর জানুয়ারী মাসে সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদারের সহযোগী শানু তালুকদার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা এবিএম রফিকুল্লাহর দুই ছেলে বরগুনা সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ ওহাব মিয়া ও উত্তর পুর্ব কলাগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মিথ্যা চাঁদা দাবীর অভিযোগ দেন।  কিন্তু ওই অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়। দ্রæত আওয়ামীলীগ দোসর সুপার আলাউদ্দিন সিকদারের দুর্নীতি ও অনিয়নের অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী ভুক্তভোগীদের। 

ভুক্তভোগী আব্দুল হক বলেন, ভোকেশনাল শাখা না খুলেই ৫ লাখ টাকা ঘুস নিয়ে আমাকে ভুয়া নিয়োগ দিয়েছেন। আমার জীবন থেকে ১৬ টি বছর নষ্ট করেছে। আমি মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আলাউদ্দিনের শাস্তি দাবী করছি।

নৈশ প্রহরী পদে আবেদনকারী মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, চাকুরী দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে সাড়ে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন। আমাকে চাকুরী না দিয়ে অন্য একজনকে চাকুরী দিয়েছেন। এ নিয়ে মাদ্রাসায় শালিস বৈঠক হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার টাকা ফেরত দেয়নি। 

প্রতিষ্ঠাতা এবিএম রফিকুল্লাহ বলেন, সুপার আলাউদ্দিন সিকদার মাদ্রাসাটিকে দুর্নীতির আখরায় পরিনত করেছে। ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্য, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, আওয়ামী লীগ দোসরদের দিয়ে কমিটি গঠনসহ নানাবিধ অভিযোগে অভিযুক্ত সুপার। দ্রুত তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তার। 

আমতলী উপজেলা ওলামা লীগ সভাপতি মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদার বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে নানাভাবে হয়নি করতেই এমন অভিযোগ আনা হয়েছে।

বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, অনিয়মের  অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতার দুই ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছিল কিন্তু ওই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলে, সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন