ফাইল ফটো
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তার বাবা মকবুল হোসেন বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে গুলি করে হত্যা করা হয় আবু সাঈদকে। এর আগে বুধবার প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার সূচনা বক্তব্যে জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্টদের তালিকার সর্বশেষ সংযোজন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ, সাহসের উজ্জ্বল প্রতীক। পুলিশের গুলির মুখে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে তিনি যেন বলতে চেয়েছিলেন— এভাবে মানুষ মারা চলবে না।
সূচনা বক্তব্য শেষে আদালতে টিভি মনিটরে সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ভিডিও দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বাবা। প্রসিকিউশন জানায়, মামলায় তিনি সাক্ষ্য দেবেন।
এ মামলায় মোট ৩০ আসামির মধ্যে ৬ জন কারাবন্দি অবস্থায় আদালতে হাজির আছেন, আর ২৪ জন এখনও পলাতক। কারাবন্দিদের মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ আরও অনেকে। পলাতকদের মধ্যে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদ ও কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা এবং ছাত্রলীগ নেতারা।
প্রসিকিউশন জানায়, ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর ৩০ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগপত্র আমলে নেয় এবং পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পরবর্তীতে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। গত ৬ আগস্ট এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধেই আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এই বিচার কেবল রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নয়, বরং একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য। এটি প্রমাণ করবে, দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিকেও আইনের আওতায় আনা সম্ভব।



