Logo
Logo
×

আইন-আদালত

আদালতে ব্যারিস্টার সুমনের ক্ষোভ, সালমানকে চোর বলে দুয়ো

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩১ পিএম

আদালতে ব্যারিস্টার সুমনের ক্ষোভ, সালমানকে চোর বলে দুয়ো

ছবি - সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান

হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে মুগদা থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

এদিন ১০টা ৭ মিনিটের দিকে তাকে পুলিশি নিরাপত্তায় আদালতের হাজতখানা থেকে এজলাসে হাজির করা হয়। এরপর সকাল ১০টা ১১ মিনিটে এজলাসে বিচারক প্রবেশ করেন।

সময় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। শুনানির শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাকে আবারও হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিন আদালতে নতুন মামলায় গ্রেপ্তারের শুনানি শেষে সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার সুমন বলেন, নতুন প্রজন্মের সঙ্গে আপনারা বেইমানি করছেন, ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না। দেশটাকে ভালো রাখুন। তিনি বলেন, দেশটাকে পুড়িয়ে ফেলছে ওরা, দেশটাকে রক্ষা করেন।

এদিন আদালতে এজলাসে হাজির হওয়ার পরপরই নিজের আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করতে থাকেন ব্যারিস্টার সুমন। এজলাসে আসার পর থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি হাসিমুখে ছিলেন। এ সময় আদালত তাকে নতুন হত্যা মামলার জন্য ডাকলে কাঠগড়ার পেছন থেকে সামনে গিয়ে আদালতে হাত নেড়ে হাজিরা দেন। এরপরই আবার পেছনে চলে আসেন তিনি। আদালতে বিচারিক কার্যক্রম চলার সময়ও তিনি তার আইনজীবীদের সঙ্গে গল্প করতে থাকেন।

সময় আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সুষ্ঠু বিচার হলে এসব মিথ্যা মামলায় আমার কিছু হবে না। ন্যায়ের পক্ষে লড়েছি সবসময়। ন্যায্য কথা বলার কারণেই আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। পরে এজলাসে ব্যারিস্টার সুমনের এক আত্মীয় তাঁর খোঁজখবর নিলে এজলাসে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে বাইরে বের করে দেন।

এদিন শুনানি শেষে ব্যারিস্টার সুমনের আইনজীবী মো. লিটন আহমেদ বলেন, শারীরিকভাবে উনি সুস্থ আছেন। আমরা জানতে চাইছিলাম কারাগারে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা? উনি তেমন কোন সমস্যার কথা বলেননি। আগের মতোই আছেন বলে জানিয়েছেন। ব্যারিস্টার সুমন সবসময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেছেন।

সুমনকে গ্রেপ্তার দেখানো মামলার সূত্রে জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ১৮ জুলাই ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী আব্দুল আছেত শামীম আদালতের কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। পথে মুগদা থানার বাবু ডাক্তারের গলিতে আসামির ছোঁড়া রাবার বুলেট তাঁর হাতে, কপালে, বুকে, চোয়ালে ও পেটে লাগে। পরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি। এ ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫১ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে মুগদা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী আব্দুল আছেত। মামলায় সায়েদুল হক সুমন ২৫ নাম্বার এজাহারনামীয় আসামি। এর আগে গত ২১ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে উদ্দেশ্ করে আদালতের উৎসুক জনতা 'চোরা সালমান, চোরা সালমান' বলে দুয়োধ্বনি দিতে থাকেন

তাকে উদ্দেশ্ করে তারা বলেন, এই চোর সালমান, চোরা সালমান দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। টাকাপয়সা গিইলা খাইছে।

এদিন বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হাতে হাতকড়া ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয় সালমান এফ রহমানকে। আদালতে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালীন পুরো সময় নিশ্চুপ ছিলেন সালমান এফ রহমান। শুনানি শেষে মোহাম্মদপুর থানার শাহরিয়া হোসেন রোকন হত্যাচেষ্টা মামলায় সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তা‌র দেখান আদালত।

আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন। সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ আসে দুর্নীতি দমন কমিশনে। অভিযোগ আমলে নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে বেক্সিমকো গ্রুপের এই চেয়ারম্যানসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করে সংস্থাটি।

এরপর সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ভুয়া প্রতিষ্ঠান খুলে আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ১১০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের প্রমাণ পায় দুদক। এ ঘটনায় সালমান এফ রহমান, তার ছেলে, সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে সংস্থাটি।

ব্যারিস্টার সুমন, সালমান এফ রহমান ছাড়াও নতুন মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের অন্য হেভিওয়েট নেতারা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, ঢাকা উত্তরের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও সাবেক এমপি সাদেক খান।

মামলাগুলোর মধ্যে মোহাম্মদপুর থানার শাহরিয়া হোসেন রোকন হত্যাচেষ্টা মামলায় আনিসুল, সালমান, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তা‌র দেখিয়েছেন আদালত। এছাড়া মুগদা থানায় আইনজীবী আব্দুল আছেত শামীম ও মোহাম্মদপুর থানার শাহরীয়ার হোসেন রোকন হত্যাচেষ্টা মামলায় সাদেক খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সাদেক খান, আনিসুলসহ অন্যদের গ্রেপ্তার দেখানো মামলা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ময়ূর ভিলার রাস্তায় বেলা ১১টায় আন্দোলনে অংশ নেন শাহরিয়ার হোসেন রোকন। এদিন আসামিদের ছোঁড়া গুলি তাঁর বাম পায়ে লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় গত ৩ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা হয়।




Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন