
প্রিন্ট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪০ এএম
স্ত্রী-শ্যালিকাসহ চেইনম্যান নজরুলের দুর্নীতির মামলার বিচার শুরু

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার বরখাস্ত সাবেক চেইনম্যান (শিকলবাহক) নজরুল ইসলাম, স্ত্রী, শ্যালিকা, দোকান কর্মচারীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মিজানুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
নজরুল ছাড়া বাকি ছয় আসামি হলেন নজরুলের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, শ্যালিকা কোহিনুর আক্তার, জামাল উদ্দিন, শামসুন নাহার চৌধুরী ও শামসুল আলম এবং দোকান কর্মচারী শাহাদাত হোসেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাহেদ কবির বলেন, দুর্নীতির মামলায় নজরুল, স্ত্রীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। নজরুল ও তাঁর স্ত্রীর ১১ কোটি ২১ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক অভিযোগপত্র দেয় এ মামলায়। আসামিদের মধ্যে নজরুল ছাড়া বাকি ছয়জন পলাতক। আগামী ধার্য দিন সাক্ষ্য শুরু হবে।
দুদক জানায়, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সে স্ত্রীর মালিকানাধীন দোকানে দুদকের হাতে ধরা পড়ার পর নজরুলের কাছে পাওয়া যায় প্রায় ৯১ লাখ টাকার চেক ও নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা। এ ঘটনায় দুদক মামলা করে। সাড়ে চার বছর তদন্ত শেষে গত বছরের জুনে দুদক এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়।
এতে বলা হয়, নজরুল তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের নামে নগরের জিইসি ওআর নিজাম রোড এলাকায় ২ হাজার ৭০ বর্গফুটের ১ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি এবং একই এলাকায় ১ হাজার ৬২০ বর্গফুটের ১ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকার মোট দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। নজরুলের নামে গ্রামের বাড়ি হাটহাজারীতে রয়েছে ৮২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা দামের একটি তিনতলা বাড়ি। নগরের ষোল শহর এলাকার চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় ৮৫ লাখ টাকা দামের একটি, একই তলায় ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার আরেকটি, একই মার্কেটের প্রথমতলায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার আরেকটিসহ তিনটি দোকান রয়েছে নজরুল ও তাঁর স্ত্রীর নামে। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে সাড়ে ২২ লাখ টাকার একটি প্রাইভেট কার রয়েছে।
নজরুলের শ্যালিকা কোহিনুর আক্তারের ব্যাংক হিসাবে ২ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, দোকান কর্মচারী শাহাদাত হোসেনের হিসাবে ৩ কোটি ১৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, আত্মীয় শামসুল আলমের হিসাবে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, শামসুন নাহারের হিসাবে ৩ কোটি টাকা ও জামাল উদ্দিনের হিসাবে ৭১ লাখ ২২ হাজার টাকার তথ্য পায় দুদক। অথচ কোহিনুর ও শামসুন নাহার গৃহিণী। অন্যরা ব্যবসায়ী দাবি করলেও তাঁদের ব্যবসার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি দুদককে। জানা গেছে, এই টাকা বিভিন্ন সময়ে নজরুল ইসলাম তাঁর আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন।
দুদক জানায়, মামলায় শুরুতে নজরুল ও তাঁর স্ত্রীকে আসামি করা হলেও তদন্তে অন্য পাঁচজনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তাঁরা এসব অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে স্বামী-স্ত্রীকে সহযোগিতা করায় আসামি করে দুদক।