
প্রিন্ট: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
‘ধর্ষণের ভিডিও ধারনের পর ম্যাসেস আমাদেরকে খুশী রাখবা’

অনলাইন ডেস্ক :
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

ছবি-সংগৃহীত
‘আমাদেরকে খুশী রাখবে। অন্যথায় আমরা তোমার ভিডিও ও ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেব।’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ এবং এর ভিডিও ধারণের পর এমন কথা বলেন ওই দুই ছাত্র। পুলিশ ওই দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ। ফেসবুকে ধর্ষণের সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নিয়মিত খুশি রাখতে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বার্তা পাঠাতেন অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ ও ২০ জুন সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী সেই নারী শিক্ষার্থী।
মামলার এজাহারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২ মে আনুমানিক রাত ৮ ঘটিকার সময় অভিযুক্ত শান্ত তারা আদনানকে নিয়ে রিকাবী বাজার একটি কনসার্টে যাওয়ার জন্য কোতোয়ালি মডেল থানাধীন আখালিয়া খুলিয়াপাড়াস্থ মেসে যান ওই ছাত্রী। সেখানে আদনান তাকে কোমল পানীয় খেতে দেন। কোমল পানীয় খেয়ে কনসার্টের উদ্দেশ্যে সুবিদবাজারে যাওয়ার পর অসুস্থ বোধ করেন তিনি। পরে তাকে হলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে আদনান এবং পার্থ তাকে পুনরায় মেসে নিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বলেন। এরপর আদনান এবং পার্থ তাকে ধর্ষণ করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পরদিন সকালে ঘুম ভাঙলে আদনানের বিছানায় নিজেকে দেখতে পান ওই ছাত্রী। তখন পাশের বিছানায় শুয়ে থাকা শান্ত তারা আদনান তাকে হলে চলে যেতে বলেন। তখন ওই ছাত্রী কান্নার চেষ্টা করলে শান্ত তারা আদনান তাকে মারধর করতে উদ্যত হন।
প্রাণ বাঁচাতে তিনি দ্রুত হলে চলে যাওয়ার সময় আদনান তাকে বলেন, ‘ঘটনা কাউকে বললে তোরই ক্ষতি হবে।’ ঘটনা কাউকে জানাবেন না মর্মে আশ্বাস দিয়ে তিনি হলে চলে যান।
এজাহারে আরো বলা হয়, ঘটনার পরের দিন সন্ধ্যায় স্বাগত দাস পার্থ তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ওই তরুণীকে হোয়াটসঅ্যাপে তার কিছু ছবি ও কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে বলেন, ‘যদি তুমি আমার বা আদনানের বিষয়ে কারো কাছে কোনো অভিযোগ করো তাহলে তোমার এসব ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেব।’
পরবর্তীতে গত ১৮ জুন আদনান ও পার্থ ক্যাম্পাসে দেখা করে বলেন, ‘তোমার ভিডিও ক্লিপ ও ছবি আমাদের কাছে আছে। এখন থেকে তুমি নিয়মিত আমার মেসে যাবে।
এ ঘটনায় গতকাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯ (৩) ধরা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর ৮(১)/ ৮(২) ও ৮(৩) ধারায় মামলা করেন ওই ছাত্রী। পরে অভিযুক্ত দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।