
প্রিন্ট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১১:০৪ এএম
হলি আর্টিজান হামলা : ৭ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের যুক্তি পূর্ণাঙ্গ রায়ে

অনলাইন ডেস্ক :
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১২:৩৪ পিএম
-6853af66ae01f.jpg)
ছবি-সংগৃৃহীত
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে কেন আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে,সে বিষয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাসসের এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানানো হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এই সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (উগ্রবাদী হামলা) সহায়তার কারণে তারা সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ৬(১)(ক)(আ) ধারায় বর্ণিত অপরাধে দোষী। তবে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক ব্যাখ্যা না করেই আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।’
এই মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি পর্যালোচনার ভিত্তিতে রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ৬(১)(ক)(অ)(আ) ধারায় আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে মর্মে গণ্য করে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাদের একই আইনের ৬(২)(আ) ধারায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হলো। তবে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি, আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।’
এছাড়া হাইকোর্ট তার রায়ে আরো বলেন, ‘বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ ও রহিত করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে (সাত আসামি) আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।’
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে উগ্রবাদীরা দেশী-বিদেশী অতিথিদের পণবন্দী করে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে ২২ জনকে। নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশী নাগরিক। তাদের মুক্ত করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাও প্রাণ হারান।
এ ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ‘নব্য জেএমবি’র সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
এরপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স এবং আপিল শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় সংশোধন করে সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেন।
হাইকোর্টে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া সাত আসামি হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো: জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।