
প্রিন্ট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৪ এএম
নারী কেলেঙ্কারি যেন বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিশব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম

বহুল আলোচিত বসুন্ধরা গ্রুপ আবারও নারীঘটিত কেলেঙ্কারিতে খবরের শিরোনাম হয়েছে। এবার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান সানভীরের বিরুদ্ধে। অভিনেত্রী ইশরাত জাহান রীতিকা সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় সানভীরের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে ধরেছেন, যেখানে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি অব্যবস্থাপনা ও হুমকির কথাও বলেন।
রীতিকার ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি এক বছরের বেশি সময় ধরে সানভীরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন এবং বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সম্পর্কের শুরুতে সানভীর তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছেন এবং তাকে কোনো খোঁজখবর না নিয়ে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চাপ দিচ্ছেন।
ভিডিও বার্তায় রীতিকা আরও জানান, হঠাৎ এক ভিডিও কলে তিনি সানভীরকে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। এরপর তিনি সানভীরের বাসায় গেলে সেখানে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তিনি অভিযোগ করেন,আমি প্রেগনেন্ট অবস্থায় তার বাসায় গেলে তার বাবা,মা,বডিগার্ড,দারোয়ান ও গৃহকর্মীরা আমাকে মারধর করে,চুল ধরে টেনে বের করে দেয়,এমনকি পেটে লাথিও মারা হয়। আমার ড্রাইভারকেও তারা মারধর করে।
তিনি বলেন, ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তাকে হুমকি দেওয়া হয় যেন তিনি মুখ না খোলেন। রীতিকা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আমার যদি কিছু হয়, তাহলে এর জন্য দায়ী থাকবে সাফিয়াত সোবহান সানভীর, তার বাবা-মা এবং বসুন্ধরা গ্রুপ।”
এদিকে নির্যাতনের ঘটনায় রীতিকা বলেন,সানভীরের প্রতি রাতে দুইটা মেয়ে লাগে। আর এই মেয়ের যোগান দেয় অনু নামের এক নারী।
রীতিকা জানান,অনু যাত্রাবাড়ী থেকে ৩ হাজার টাকায় পতিতাও এনেছেন সানভীরের জন্য। পঞ্চম শ্রেণি পাস করা অনু এখন সানভীরকে ব্যবহার করে ফ্ল্যাট গাড়ি করেছে। সে এখন ২৪ লাখ টাকার প্রিমিও গাড়িতে চড়ে।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের অন্য ছেলে সায়েম সোবহান আনভীর ২০২১ সালে আলোচনায় আসেন মুনিয়া হত্যা মামলার সূত্র ধরে। ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার পরিবার অভিযোগ করে, আনভীর বিয়ের প্রলোভনে মুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং পরে হুমকি দিয়ে সম্পর্ক থেকে সরে আসেন, যা মুনিয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে।
মুনিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ছয়টি ডায়েরি এবং মোবাইল ফোনসহ নানা আলামত উদ্ধার করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে আনভীরের উপস্থিতির তথ্যও উঠে আসে তদন্তে।
পরিবারের আরেক সদস্য বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান তাসভীরের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সময় নারীঘটিত বিতর্কের অভিযোগ উঠেছে। একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানের সঙ্গেও এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ের প্রেম রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই মেয়ের বাড়ি বিক্রমপুর। এছাড়াও ইংরেজি মিডিয়ামে পড়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও তার অবৈধ সম্পর্কের কথা জানিয়েছে সূত্র।
২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল আরাফা প্রধান মিথিলা নামের এক কিশোরীকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে ধর্ষণের পর মারধর করে আটকে রেখে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান তাসভীরের বিরুদ্ধে।
পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় মেয়েটি উদ্ধার হলেও প্রশ্ন ওঠে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। মূল বিষয়টি পাশ কাটিয়ে একটি নামমাত্র মামলা নিয়ে এতবড় স্পর্শকাতর ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়।