
প্রিন্ট: ১২ জুন ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম
আন্দোলনের মধ্যেই ঢাকা পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৬ এএম

ছবি : সংগৃহীত
ছাত্র আন্দোলনের মাঝেই ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. মুস্তাফিজুর রহমান খানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তার স্থলে প্রতিষ্ঠানটির উপাধ্যক্ষ শাহেলা পারভীনকে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সিরাজ উদ-দৌলা খান এ তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। আদেশটি জনস্বার্থে জারি হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো আমরা গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করছি। আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রশাসনিক পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। অধ্যক্ষ বদল তারই একটি অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার সবসময় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিকে মূল্যায়ন করে থাকে। আশা করি শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন প্রত্যাহার করে একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরবে।”
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে-
১. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদের কোটা বাতিল ও অনিয়মিত নিয়োগ বাতিল: ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০% কোটা বাতিল, হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল রায় বাস্তবায়ন, এবং বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া সংশোধনসহ সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুতির দাবি।
২. ভর্তির বয়সসীমা নির্ধারণ ও কারিকুলাম আধুনিকীকরণ: বয়স নির্ধারণ করে ভর্তির বিধান চালু এবং আন্তর্জাতিক মানের চার বছর মেয়াদি ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষাক্রম চালুর প্রস্তাব।
৩. ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদমর্যাদা রক্ষা: ডিপ্লোমা পাস প্রকৌশলীদের অধিকার রক্ষায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান।
৪. কারিগরি পেশাজীবীদের জন্য পদ সংরক্ষণ: প্রশাসনিক ও একাডেমিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে শুধুমাত্র কারিগরি শিক্ষায় অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগের দাবি।
৫. স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কার কমিশন গঠন: কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে স্বতন্ত্রভাবে পরিচালনার জন্য ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের আহ্বান।
৬. টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা: পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়াতে নতুন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও নির্মাণাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে ভর্তি নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
এই আন্দোলন বর্তমানে দেশজুড়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।