Logo
Logo
×

শিক্ষা

সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২২ পিএম

সিটি কলেজ সরিয়ে নেওয়ার দাবি ঢাকা কলেজের

সায়েন্সল্যাব থেকে ঢাকা সিটি কলেজকে সরানোর দাবি তুলেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফাইল ফটো

সংঘর্ষ এড়াতে ঢাকা সিটি কলেজ সরিয়ে অন্য স্থানে নেওয়াসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রফিকুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও এক শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা কলেজের স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা যারা এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন তাদের পদত্যাগ করতে হবে।’

ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সিটি কলেজের যেসব শিক্ষক এ ঘটনায় সরাসরি নির্দেশদাতা ও জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ক্যাম্পাসে এসে পরিদর্শন করতে হবে।’

আ ক ম রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা কলেজের সাত শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং শত শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাই পরিকল্পিতভাবে ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হামলা করে বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাতে সরাসরি সিটি কলেজ ও পুলিশ জড়িত।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি মেনে নিয়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা যখন কলেজের ভেতরে ঢুকে পড়েন তখন আমিসহ কলিগরা এগিয়ে যাই। টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ফলে আমাদের কতজন ছাত্র আহত হয়েছেন তা নিশ্চিত নই। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের শাস্তি চাই।’

দাবিগুলো হলো—

  • দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি শিক্ষকরাও আহত হয়েছেন।
  • আমাদের স্থাপনায় সেনাবাহিনী সরাসরি হামলা ও ভাঙচুর করেছে। যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এ হামলায় সংশ্লিষ্ট জড়িত প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • বিশেষ করে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা যারা এই হামলার নির্দেশ দিয়েছে তাদের পদত্যাগ করতে হবে।
  • ইতোপূর্বে সকল বিশৃঙ্খলার সঙ্গে সিটি কলেজ কতিপয় সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এবং পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে সিটি কলেজকে স্থানান্তর করতে হবে।
  • সিটি কলেজের যেসব শিক্ষকরা এই নিন্দনীয় ঘটনা সরাসরি নির্দেশ দিয়েছে এবং জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
  • এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সশরীরে ক্যাম্পাসে এসে পরিদর্শন করতে হবে।
  • এই হামলায় জড়িত সেনা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।
  • বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাত শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন এবং শত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন তাই পরিকল্পিতভাবে ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হামলা করে বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাতে সরাসরি সিটি কলেজ এবং পুলিশ জড়িত ছিল।
  • ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সকল দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে ঢাকা কলেজে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে দুপুরে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় ঢাকা কলেজের বাস যেতে তারা বাধা দেন এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের ‘শঙ্খনীল’ নামে একটি বাস ভাঙচুর করে। এর পরপরই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সায়েন্সল্যাবে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় কলেজের ৩০ জন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

এর আগে গত ২৮ অক্টোবর সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে দীর্ঘ ২০ দিন বন্ধ রাখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর পর ১৯ নভেম্বর কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
Email: [email protected]

অনুসরণ করুন