রাবির আরবি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ
রাবি প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে নিয়োগ স্থগিত রেখে তদন্ত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সাতজন চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তাঁরা।
তাঁদের দাবিগুলো হলো- নিয়োগ-সংক্রান্ত অভিযোগের স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত-কমিটি অতি দ্রুত গঠন করা; তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নিয়োগ বা সুপারিশসমূহ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা; তদন্ত কমিটিতে যেন অরাজনৈতিক, নীতিসংগত ও অভিজ্ঞ শিক্ষক প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা; আঞ্চলিকতা, রাজনৈতিক পরিচয়, অর্থনৈতিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা এবং ভবিষ্যতে যেকোনো নিয়োগে স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা দিতে একটি ট্রান্সপারেন্ট রিক্রুটমেন্ট প্রটোকল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
অভিযুক্তরা হলেন মাে. জুনাইদ আহমদ, মো. বায়েজিদ, এইচ এম মুহিব্বুল্লাহ, মুহা. আবুল ফুতুহ, মো. ফরহাদুল ইসলাম এবং শহীদুল ইসলাম। অন্যদিকে অভিযোগকারীরা হলেন ড. নুরুল ইসলাম, আবু ইউসুফ আলী, সাদিয়া খাতুন, ড. মো. হাবিবুল্লাহ, আ. মতিন, মো. হাদিউজ্জামান ও আবু বকর সিদ্দিক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চাকরিপ্রার্থী ড. নুরুল ইসলাম বলেন, আরবী বিভাগে নিয়োগ-সংক্রান্ত একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের সুনাম, একাডেমিক পরিবেশ ও ন্যায়ভিত্তিক নিয়োগনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বিভিন্ন সূত্র ও প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে যে, কিছু প্রার্থীকে আঞ্চলিকতা, ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা, রাজনৈতিক পরিচয়, অর্থনৈতিক লেনদেন, এমনকি অনৈতিক আচরণের পরও প্রশাসনিক সহানুভূতির সুযোগ নিয়ে বিভাগে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তি, অতীত প্রশাসনের নির্দিষ্ট অংশ এবং রাজনৈতিক পরিচয়ধারীরা নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তিনি বলেন, এমনকি যাদের কারো দ্বারা অর্থের বিনিময়ে বিভাগীয় শিক্ষককে প্রভাবিত করার চেষ্টার অডিও ফাঁস হওয়ার মতো ঘটনাও ইতিপূর্বে ঘটেছে। এ ছাড়া, ক্যাম্পাসের আদর্শিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের পরিপন্থী মিছিল-মিটিং, নিপীড়ন, নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর হয়ে সক্রিয় তৎপরতা, অথবা কোনো গোষ্ঠীর তল্পিবাহক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদেরও বিশেষ পরিচয়ের ভিত্তিতে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি আরও বলেন, কিছু প্রার্থীকে ব্যক্তিগত নৈতিক স্খলন বা শৃঙ্খলাভঙ্গের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও বিভাগে নেওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ ধরনের ঘটনাগুলো শুধু নিয়োগ ব্যবস্থায় অসঙ্গতিই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের নৈতিক মানদণ্ড, সামগ্রিক সুনাম এবং পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরবি বিভাগের সভাপতি ড. মাে. জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক জেলা থেকে পাচজন নিয়োগ হয়েছে এটা আমার জানা নাই, এটা এখনাে প্রকাশিত হয়নি৷ আমি যতটুকু জানি একজেলা থেকে পাঁচজন হয়নি। এটা অসত্য ব্যাপার৷ এখানে জেলা দেখা হয়নি, ভালাে প্রার্থীদের বাছাই করা হয়েছে৷ বর্তমান উপাচার্য লিখিত ও ভাইভার বাইরেও মার্কিং করেন৷ যেমন- গবেষণা, পিএইচডি, ফার্স্টক্লাস ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত উপাচার্যের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি৷ যারা লিখিততে বা অন্য জায়গায় টিকেনি তারা বিভিন্ন বেশ ধরে এসেছে৷ কিন্তু নৈতিকভাবে দূর্বলই থেকেছে তারা৷
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন অভিযোগকারীরা।



