Logo
Logo
×

শিক্ষা

সুবর্ণার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কি সফল হবে ?

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২৯ পিএম

সুবর্ণার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন কি সফল হবে ?

ছবি-সংগৃহীত

প্রত্যেকের জীবনের গল্প আলাদা হলেও কারও কারও জীবনের ছবিতে ভেসে ওঠে কেবল দারিদ্র্য আর সংগ্রাম। এমনি এক মা কনিকা খাতুন, রাত জেগে সেলাই মেশিনে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন, মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। তার মেয়ে কামরুন নাহার সুবর্ণা এবার এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ-৫।

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী পৌর এলাকার খামারিয়াপাড়া গ্রামের মেয়ে সুবর্ণা শ্রীবরদী উপজেলার মাথুরানাথ বিনোদিনী পাইলট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। ভালো ফল করলেও কলেজে ভর্তি ও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার খরচ নিয়ে শঙ্কায় দিন পার করছে মেধাবী এ শিক্ষার্থী।

সুবর্ণার বাবা সোহেল মিয়া ছিলেন একজন চা দোকানি। সুবর্ণা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় ব্রেইন স্ট্রোকে মারা যান তিনি। এর পর থেকে মা কনিকা খাতুন সংসারের হাল ধরেন। দরজির কাজ শেখেন এবং গ্রামের নারীদের কাপড় সেলাই করে সংসার চালানো শুরু করেন। ছোট মেয়ে ও বড় মেয়েকে নিয়ে কষ্টে চলে তাদের সংসার। সেলাইয়ের কাজে মাকে সাহায্য করার পাশাপাশি সুবর্ণা ছোট শিশুদের প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে।

কনিকা খাতুন বলেন, আমার স্বামী প্রায় পাঁচ বছর আগে মারা যান। ভাঙা একটি ঘরে থাকতাম, পরে মানুষের সহযোগিতায় একটি ঘর উঠানো হয়। আমার মেয়ে আলহামদুলিল্লাহ ভালো ছাত্রী, এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে। খারাপ ছাত্রী হলে হয়তো এত কষ্ট করতাম না। ও ভালো লেখাপড়া করে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তবে ভর্তি করানো এবং কলেজে পড়াশোনা চালানোর জন্য যে অর্থ প্রয়োজন তা যোগাড় করা আমার পক্ষে খুব কঠিন। আমাদের কোনো জমিজমা নেই। আমি সেলাই মেশিনে কাজ করি, এখন প্রায় সবার সেলাই মেশিন থাকায় কাজও খুব একটা হয় না।

কামরুন নাহার সুবর্ণা বলেন, সবার আগে আমি একজন ভালো মানুষ হতে চাই। আমার বাবা অর্থের অভাবে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন। তাই আমি একজন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। বিশেষ করে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। আমার মা আমার পড়াশোনার জন্য অনেক কষ্ট করছেন। আমি আমার মা ও দেশের জন্য কিছু করতে চাই। আমার প্রিয় সংগঠন ডপস আমাদের পাশে না থাকলে অনেক আগেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেত। তবে এখন পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের সহযোগিতা খুব প্রয়োজন।

সুবর্ণার দাদা খলিলুর রহমান বলেন, আমার ছেলে চিকিৎসার অভাবে মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ছেলের বউ দুই সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন পার করছে। সুবর্ণা আলহামদুলিল্লাহ ভালো ছাত্রী। আমরা যতটুক পারছি সহযোগিতা করছি, কিন্তু সামনের দিনগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজনযারা সচ্ছল আছেন তারা যদি সহযোগিতা করেন তবে আমার নাতনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে

মাথুরানাথ বিনোদিনী পাইলট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, কামরুন নাহার সুবর্ণা আমাদের স্কুলের একজন ভালো ছাত্রী। তার পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে যতটা পারা যায় ফি মওকুফ করেছি। তবে তার ভবিষ্যতের জন্য বড় পরিসরে সহায়তা দরকার।

স্থানীয় শিক্ষার্থী সংগঠন ডপস-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক শাহীন মিয়া বলেন, অষ্টম শ্রেণি থেকেই আমরা সুবর্ণার পড়াশোনায় সহায়তা করছি। ডপসের বৃত্তি পরীক্ষায় সে প্রথম হয়েছিল। এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে এবং শেরপুর সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তবে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা ব্যয়বহুল। ভর্তি, বই ও থাকা-খাওয়ার খরচ মিলিয়ে প্রতি মাসে প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা প্রয়োজন। আমরা ডপসের পক্ষ থেকে একটি অংশ বহন করব, তবে পুরোটা বহন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা জরুরি।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, কামরুন নাহার সুবর্ণার বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কোনো তথ্য বা আবেদন আসেনি। তবে আবেদন করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। সূত্র : অনলাইন

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন