
প্রিন্ট: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৮ এএম
জুলাইয়ের মধ্যে ৬ দুর্বল ব্যাংক একীভূত হচ্ছে : গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১২:৩৩ এএম

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ছয়টি বেসরকারি ব্যাংককে একীভূত করে সাময়িকভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রক্রিয়া আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গভর্নর এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, “এই ছয়টি দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করে একটি সুষ্ঠু কাঠামোতে আনার পর সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় রাখা হবে এবং পরবর্তীতে পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হবে।”
একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক
এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের প্রভাবাধীন, এবং একটি পরিচালনায় ছিলেন ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদার।
গভর্নর জানান, ব্যাংকগুলোর তারল্য সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে লিকুইডিটি সহায়তা দিয়েছে। মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থায়নও করা হবে। তবে এই মালিকানা থাকবে অস্থায়ী। পুনর্গঠনের পর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মূলধন সংক্রান্ত নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংককে তার ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে সর্বনিম্ন ১২.৫% মূলধন রাখতে হয়, যার মধ্যে ১০% বাধ্যতামূলক মূলধন এবং ২.৫% ‘ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার’। গভর্নর জানিয়েছেন, যেসব ব্যাংক এই মানদণ্ড পূরণ করতে পারছে না, তাদের চার বছরের মধ্যে মূলধন অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, “একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে ছয় ব্যাংক একীভূত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমরা সেটার প্রতিবাদ করিনি, অর্থাৎ গভর্নর যেটি বলেছেন তা সঠিক বলেই ধরা যায়। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।”
এই পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।