
প্রিন্ট: ১২ জুন ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন, থাকছে এককালীন অর্থ তোলার সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:৪৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভবিষ্যৎমুখী করতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। এবার থেকে কোনো চাঁদাদাতা ৬০ বছর বয়স পূর্ণ করার পর চাইলে নিজের জমাকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ এককালীন তুলতে পারবেন—এই সুবিধা প্রথমবারের মতো চালু হলো।
বুধবার (১৪ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পরিচালনা পর্ষদের দ্বিতীয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সভায় আরও জানানো হয়, প্রবাস ও প্রগতি স্কিমে মাসিক চাঁদার ন্যূনতম হার ২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। এর ফলে স্বল্প আয়ের মানুষ ও প্রবাসীরা আরও সহজে এই স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন। অপরদিকে, উচ্চ আয়ের বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সর্বোচ্চ মাসিক চাঁদার সীমা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন খান বলেন, ‘‘এককালীন অর্থ তোলার সুযোগ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। কেউ চাইলে তুলতে পারবেন, আবার কেউ তা না তুললে মাসিক পেনশনের পরিমাণ বেশি পাবেন।’’
প্রগতি স্কিমে এবার আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োজিত সেবাকর্মীরাও অংশ নিতে পারবেন। এতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বহু কর্মী সামাজিক নিরাপত্তার কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত হবেন।
পেনশন ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে কর্তৃপক্ষ এবার ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন (ISSA)-এর সদস্যপদ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে অনুমোদন দিয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রচার বাড়াতে বড় পরিসরে গণমাধ্যমে প্রচারণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফেসবুক, ইউটিউব, জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন টকশো ও আন্তর্জাতিক খেলার সম্প্রচারে বিজ্ঞাপন প্রচারের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া ইসলামিক মূল্যবোধের আলোকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের একটি বিকল্প সংস্করণ চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে এবং পরবর্তী সভায় তা উপস্থাপন করা হবে।
এসব সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতীয় পেনশন ব্যবস্থাকে আরও গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক রূপে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার, যাতে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।