
প্রিন্ট: ১৩ জুন ২০২৫, ০১:৪০ পিএম
জেট ফুয়েলের দাম কমল, আন্তর্জাতিক রুটে লিটারে ১৫ সেন্ট হ্রাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে উড়োজাহাজের জ্বালানি তেল বা জেট ফুয়েলের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মঙ্গলবার (১৩ মে) ঘোষিত নতুন দর অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক রুটে প্রতি লিটার জেট ফুয়েলের দাম ৭৫ সেন্ট থেকে কমিয়ে ৬০ সেন্ট এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ১১১ টাকা থেকে কমিয়ে ৯৩.৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন মূল্য আজ রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হবে।
এত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করত। জেট ফুয়েলের উচ্চমূল্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ট্রানজিট ফ্লাইট কম ছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন দরে ফুয়েল সাশ্রয়ী হলে বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করার আগ্রহ বাড়তে পারে, যা দেশের জন্য বাড়তি রাজস্ব ও আন্তর্জাতিক ইমেজ বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, আমদানি মূল্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতি মাসে জেট ফুয়েলের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে। তবে অন্যান্য কমিশন ও চার্জে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফার্নেস অয়েল ও জেট ফুয়েলের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বিইআরসিকে দেওয়া হয়। এরপর ২৩ মার্চ প্রথমবারের মতো জেট ফুয়েলের দাম নিয়ে গণশুনানি করে প্রতিষ্ঠানটি। বিপিসি সে সময় আন্তর্জাতিক রুটে লিটারপ্রতি মাত্র ১ সেন্ট কমানোর এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ১ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
বিপিসির হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেট ফুয়েল বিক্রি হয়েছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৫ টন, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৩ টনে।
২০০৩ সালে গঠিত হলেও দীর্ঘদিন জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণে নিষ্ক্রিয় ছিল বিইআরসি। কারণ, আইনে তাদের এখতিয়ার থাকলেও প্রয়োজনীয় প্রবিধানমালা ঝুলে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আইন সংশোধন করে নির্বাহী আদেশে দাম নির্ধারণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়, ফলে বিইআরসি কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে নির্বাহী আদেশের ধারা বাতিল হওয়ায় বিইআরসি ফের সক্রিয় ভূমিকা পালন শুরু করেছে।
তবে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানিগুলোর দাম এখনো নির্বাহী আদেশেই নির্ধারিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা প্রবিধানমালা এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় জ্বালানি বাজারে স্থায়ী স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়ে গেছে।