
প্রিন্ট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
মূল্যস্ফীতির চাপে বিপর্যস্ত মানুষের জন্যও খাদ্য সহায়তা কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
টানা মূল্যস্ফীতির চাপ দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন করে তুললেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্বল প্রশাসনিক কার্যকারিতার কারণে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে সরকারি খাদ্য বিতরণ ৭ শতাংশের বেশি কমেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি সংস্থাগুলো—যেমন খাদ্য অধিদপ্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়—মোট ২৩.৪৬ লাখ টন চাল ও গম বিতরণ করেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ২৫.৩৪ লাখ টন, যা তুলনামূলকভাবে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি।
এই হ্রাসকে 'উদ্বেগজনক' বলে মন্তব্য করেছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, গত বছরের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং বিতরণ চ্যানেলে তার প্রভাব হতে পারে এই হ্রাসের একটি বড় কারণ।
অধ্যাপক রায়হান আরও বলেন, মৌলিক সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে সরকারের উচিত ছিল বিকল্প উদ্যোগ নেওয়া। কারণ, গ্রীষ্মে নিত্যপণ্যের দাম বেশি থাকার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ এখনও কাটেনি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.৩৫ শতাংশে এবং খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯.৭০ শতাংশে পৌঁছেছে। একই সময়ে ১২ মাসের গড় মুদ্রাস্ফীতি ছিল ১০.২৬ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন সরকার খাদ্য বিতরণ পরিকল্পনা কমিয়ে দেয়—২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩৩.৫৬ লাখ টন থেকে তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩০.৩ লাখ টনে নামিয়ে আনা হয়। যা বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে “অপ্রত্যাশিত” সিদ্ধান্ত ছিল।
তবে একই সময়ে ‘ওপেন মার্কেট সেলস (ওএমএস)’ কর্মসূচির আওতায় খাদ্য বিতরণ ৯ শতাংশ বেড়ে ৯.৪০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। এই খাতে বৃদ্ধিকে ইতিবাচক দেখলেও তিনি বলেন, তা সামগ্রিক ঘাটতি পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
সেলিম রায়হান স্পষ্ট করে বলেন, আইএমএফ-এর ঋণচুক্তির শর্ত খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা নয়, বরং সরকারের উচিত জনস্বার্থে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি আরও বিস্তৃত করা।