Logo
Logo
×

অর্থনীতি

মুরগির দামে স্বস্তি, সবজিতে আগুন

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৩৭ পিএম

মুরগির দামে স্বস্তি, সবজিতে আগুন

প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নিত্যপণ্যের দামে ওঠানামা দেখা যায়—এই সপ্তাহও তার ব্যতিক্রম নয়। মুরগির কেজিতে ৩০–৪০ টাকার স্বস্তি মিললেও শীতের সবজির দাম এখনো দমে না। বাজার ভরে গেলেও বেগুন, টমেটো, শিম, করলা, পটোল—সবই শত টাকার ওপরে। অন্যদিকে খেতের ধান অর্ধেক উঠলেও কমেনি চালের দাম; নতুন আলু মিলছে ১৬০ টাকায়।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে সোনালি মুরগির কেজি ২৯০ টাকা এবং ব্রয়লার ১৭০–১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল সেই দাম কমে যথাক্রমে ২৫০–২৬০ টাকা এবং ১৫০–১৬০ টাকায় নেমে আসে। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা কম আর সরবরাহ বেশি—সে কারণেই এ পতন। দেশি মুরগি এখনো কেজি ৫৫০–৬০০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০–৭৮০ টাকা এবং খাসির মাংস ১,১০০ টাকায় স্থির রয়েছে। ডিমের দামও অপরিবর্তিত—সাদা ১২০ এবং লাল ১২৫ টাকা ডজন।

নদী, খাল, বিলের মাছ বাজারে পাওয়া গেলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, কাচকি মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা; কাজলি, ট্যাংরা, চিংড়ি, বাতাসি মাছ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের রুই এবং কাতলা মাছও ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা; পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের তুলনায় ইলিশ মাছের দাম একটু কমলেও চড়া দামেই বিক্রি করতে দেখা যায়। গতকালও এক কেজির বেশি ওজন ইলিশের কেজি ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ছোটগুলো একটু কম দাম- ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা যায়। 

বিভিন্ন এলাকার শীতের সবজিতে রাজধানীর বাজারগুলো ভরে গেছে। আগের তুলনায় সরবরাহও বেড়েছে। কিন্তু দাম একটুও কমেনি। বরং কয়েক দিনের ব্যবধানে করলা, পটোল ও পেঁপের দাম বেড়েছে। গতকাল বেগুন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, টমেটো ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা, পটোলের দাম বেড়ে ৯০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। বাঁধাকপি ও ফুলকপির পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙে, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়শ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বরবটি, কচুরলতি ৮০ টাকা, মুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকার কমে মেলেনি। ২৫ থেকে ৩০ টাকার কাঁচা পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় ঠেকেছে। তবে আগের মতোই শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা ও কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা যায়।

কোনো কোনো বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ আগের মতোই। তারপরও দাম কমেনি। আগের মতোই চড়া দামে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের রফিকুল ইসলামসহ অন্য বিক্রেতারা খবরের কাগজকে জানান, শেষ সময়। পাবনার বড় সাইজের পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১২০ টাকা। তবে ফরিদপুরের পেঁয়াজ কেজিতে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতেই বেশি দামে কেনা, তাই এর কমে বিক্রি করা যাবে না। তবে আগের মতোই আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা এবং আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। নতুন আলু ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।

ভারত থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। আবার দেশি খেতের আমন ধান ৫০ শতাংশ উঠে গেছে বলে কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গত বুধবার সচিবালয়ে জানিয়েছেন। তারপরও সাগর, মনজুর, আকিজ এসেনশিয়াল, রশিদসহ অন্য কোম্পানির মিনিকেট চাল চড়া দামে কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল, ডায়মন্ডসহ আরও কিছু কোম্পানির চাল ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে আটাশ ও মোটা চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে। আটাশ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা এবং মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টাউন হল বাজারের মাদারীপুর রাইস ঘরের ম্যানেজার ধীরেন বাবু খবরের কাগজকে বলেন, ‘চাল আমদানির প্রভাবে শেষ সময়ে হলেও আটাশ ও মোটা চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে। নতুন চাল বাজারে উঠলে দাম আরও কমতে পারে।’

বিভিন্ন বাজারে গতকাল দেশি মশুর ডাল ১৬০ টাকা কেজি, মোটা দানার মশুর ডাল ১২০ টাকা, ছোলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল ১ লিটার ১৮৯ টাকা, ৫ লিটার ৯২২ টাকা, চিনি ১০০ টাকা কেজি, দুই কেজি আটার প্যাকেট ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টাউন হল বাজারের মনির স্টোরের মো. আনোয়ারসহ অন্য খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ‘এর মধ্যে শুধু চিনির দাম কিছুটা কমেছে। অন্য কোনো পণ্যের দাম কমেনি।’

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন