Logo
Logo
×

অর্থনীতি

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

বাংলাদেশের ৬ কোটির বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৬ এএম

বাংলাদেশের ৬ কোটির বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে

দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে বাংলাদেশকে তরুণ, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দ্রুত কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। মঙ্গলবার প্রকাশিত তাদের নতুন প্রতিবেদন ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও বৈষম্য মূল্যায়ন–২০২৫’–এ এই তাগিদ দেওয়া হয়।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়ে পড়লে দেশের প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ মানুষ, যা মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমলেও ২০১৬ সালের পর এ অগ্রগতি মন্থর হয়েছে। এ সময়ে চরম দারিদ্র্য ১২ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ এবং মাঝারি দারিদ্র্য ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ –এ নেমে আসে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রবৃদ্ধির সুফল অধিকাংশই ধনী শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় আয়বৈষম্য বেড়েছে। গ্রামে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি দারিদ্র্য হ্রাসে ভূমিকা রাখলেও শহরাঞ্চলে দারিদ্র্য কমার হার কমেছে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের বিভাগীয় পরিচালক জ্যঁ পেম বলেন, দারিদ্র্য কমানোর সবচেয়ে কার্যকর পথ হলো কর্মসংস্থান সৃজন—বিশেষ করে নারী, যুবক এবং ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, উৎপাদনশীল খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি স্থবির হয়ে পড়েছে, ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও তরুণরা। দেশে প্রতি পাঁচজন নারীর একজন বেকার, আর শিক্ষিত নারীদের মধ্যে এই হার আরও বেশি। ঢাকার বাইরে শহরাঞ্চলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রায় থেমে গেছে। তরুণ-তরুণীদের অর্ধেকই কম মজুরির কাজে যুক্ত, যা শ্রমবাজারে দক্ষতা ও চাহিদার অসঙ্গতি নির্দেশ করে।

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসন দারিদ্র্য হ্রাসে বড় ভূমিকা রাখলেও অভ্যন্তরীণ অভিবাসীরা শহরের নিম্নমানের ঘিঞ্জি এলাকায় বাস করেন; আর আন্তর্জাতিক অভিবাসন প্রায়শই কেবল সচ্ছল পরিবারের সামর্থ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

সামাজিক সুরক্ষায় অদক্ষতা ও অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়—২০২২ সালে সামাজিক সুরক্ষার সুবিধাভোগীদের ৩৫ শতাংশ ছিলেন ধনী পরিবার, যেখানে অতি দরিদ্রদের অর্ধেকও এ সুবিধা পায়নি। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সার ভর্তুকির সুবিধাও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধনীদের দিকেই বেশি গেছে।

দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে প্রতিবেদনে চারটি প্রধান করণীয় তুলে ধরা হয়েছে—

১) উৎপাদনশীল খাতে কর্মসংস্থানের ভিত্তি শক্ত করা

২) দরিদ্র ও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য বেশি কাজের সুযোগ তৈরি

৩) আধুনিক প্রক্রিয়াজাত শিল্পে বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব নীতি প্রণয়ন

৪) শক্তিশালী রাজস্বনীতি ও লক্ষ্যভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সার্জিও অলিভিয়েরি বলেন, উদ্ভাবনী নীতি, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, শহরে গুণগত কর্মসংস্থান এবং কৃষিতে দরিদ্রবান্ধব মূল্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাসের হার আবারও ত্বরান্বিত করতে পারে এবং সমৃদ্ধিতে সবার অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে পারে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন