সঞ্চয়পত্র–নোট বদলসহ পাঁচ সেবা বন্ধ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৭ এএম
সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সাধারণ গ্রাহকদের জন্য দেওয়া পাঁচ ধরনের সেবা বন্ধের বিষয়ে অনেকেই আগে থেকে কোনো তথ্য না জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এসে বিপাকে পড়েছেন। সেবা না পেয়ে কেউ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে মন খারাপ করে নীরবে ফিরে গেছেন।
গত রবিবার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রি, ছেঁড়া–ফাটা নোট বদল, অটোমেটেড চালানসহ সব ধরনের গ্রাহকসেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এত দিন এসব সেবা দিচ্ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহী, সিলেট ও সদরঘাট অফিস।
গ্রাহকদের অভিযোগ, বাণিজ্যিক ব্যাংকে গিয়ে এসব সেবা নির্বিঘ্নে পাওয়া যায় না। অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগে বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রতি অনাস্থা তৈরি হওয়ায় অনেকেই নির্ভরযোগ্য সেবা পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আসতেন। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সেবা বন্ধ করায় তারা হতাশ।
গতকাল দুপুরে হালিমা খাতুন নামে এক গ্রাহক সঞ্চয়পত্রের স্টেটমেন্ট নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে গেলে জানতে পারেন, আর কোনো গ্রাহকসেবা দেওয়া হবে না। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই সঞ্চয়পত্র কেনা, ভাঙানো এবং স্টেটমেন্ট নিতেন তিনি। এখন অনলাইন থেকে স্টেটমেন্ট নিতে হবে শুনে মন খারাপ করে ফিরে যান তিনি। তার মতো আরও অনেক গ্রাহক সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান।
এই সেবা বন্ধের ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দীকী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কেপিআইভুক্ত (গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা) এলাকা। সরাসরি গ্রাহকসেবা দেওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছিল। তাই নিরাপত্তা বিবেচনায় এই সেবাগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, গ্রাহকরা যাতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নির্বিঘ্নে এসব সেবা পান—সেই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিশ্বের কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাধারণ মানুষের কাছে কাউন্টারের মাধ্যমে এমন সেবা দেয় না। নিরাপত্তা ও কেপিআই নীতিমালা মেনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওপর তদারকি বাড়ানোর কথাও জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ২২ জুন মতিঝিল অফিসের ক্যাশ বিভাগ পরিদর্শন করেন এবং আধুনিকায়নের দিকনির্দেশনা দেন। তারই ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রাহকমুখী এসব সেবা বন্ধ করে দেওয়া হলো।



