বাজারের অন্যতম জরুরি নিত্যপণ্য চিনির দাম তিন বছর পর আবার ১০০ টাকার নিচে নেমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির শর্ত শিথিল হওয়া, এলসির মার্জিন কমানো এবং বিশ্ববাজারে দামের পতনই সাম্প্রতিক এই স্বস্তির মূল কারণ। প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোজার তিন মাস আগে থেকেই সাধারণত চিনির দাম বাড়ে। কিন্তু এবার বাজারে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বিগত এক সপ্তাহেই চিনির দাম কেজিপ্রতি আরও ১০ টাকা কমেছে। এখন খোলা সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা কেজি এবং প্যাকেট চিনি ১০০–১১০ টাকায়। ২০২৩ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে খুচরায় চিনি সর্বোচ্চ ১৪৫ টাকায় উঠেছিল।
টিসিবি বলছে, গত বছর একই সময়ে চিনির দাম ছিল ১৩৫ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা জানান, ডলার সংকট কাটায় ও আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক হওয়ায় বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে। বিশ্ববাজারে গত এক বছরে চিনি প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে। পাইকারি বাজারেও দামে বড় কমতি দেখা গেছে।
হাতিরপুল বাজারের দোকানি মো. আমির বলেন, কোম্পানিগুলো আজকে ১০ টাকা কম দামে চিনি দিয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে প্যাকেট চিনি ১০০ টাকা এবং খোলা চিনি ৯০ টাকা কেজিতে নামতে পারে।
চিনির পাশাপাশি মোটা দানার ডালের দামও কমেছে—কেজিপ্রতি ৫ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০–১০০ টাকায়। তবে ছোট দানার আমদানি করা ডাল এখনও ১৫৫–১৬০ টাকায় অপরিবর্তিত।
অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজারে কোনো স্বস্তি নেই। রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০–১২৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহের সমান। পাইকারিতে কারওয়ান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০৮–১১০ টাকায়।
পাইকারি ব্যবসায়ী সৈয়দ পরান বলেন, এ সময় কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ কম থাকে, তাই যাদের মজুত আছে—তারা দাম বাড়ায়।
পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার সীমিত পরিসরে আমদানি অনুমতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, দাম কমেনি, তাই রোববার থেকে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। তবে মৌসুমি পেঁয়াজের ক্ষতি এড়াতে আমদানি সীমিত রাখা হবে।
এদিকে শীতের আগাম সবজি বাজারে এলেও দাম কমেনি, বরং বেড়েছে। প্রায় সব সবজির দাম কেজিতে ১০–২০ টাকা বেশি, কিছুতে ৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি। টমেটো কেজি ১৪০ টাকা (আগে ১২০), বেগুন ও করলা ১০০ টাকা, শিম ৯০–১০০, কাঁচা মরিচ ১৯০ টাকা। কিছু সবজি—মুলা, ঢ্যাঁড়স, শসা—৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চিনি ও ডালের বাজারে স্বস্তির ইঙ্গিত থাকলেও পেঁয়াজ-সবজির বাজার এখনো ক্রেতাদের জন্য কঠিন পরীক্ষাই হয়ে উঠেছে।



