ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দাম, বাণিজ্য উপদেষ্টার হুঁশিয়ারির পরও কমছে না দাম
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
দেশে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। মাত্র ১০ দিন আগে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায়। কিন্তু ২ নভেম্বর থেকে হঠাৎ দাম বাড়তে শুরু করে এবং কয়েক দিনের মধ্যে তা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় পৌঁছায়। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক ঘোষণা আসলেও বাজারে দাম কমেনি।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ছোট সাইজের পেঁয়াজ আজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়, আর বড় সাইজের পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেশি থাকায় খুচরা বাজারেও তা বেড়েছে।
শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকালের তুলনায় আজ পেঁয়াজের দাম মানভেদে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। ছোট সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়, আর বড় সাইজের পেঁয়াজ ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়।
পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বেশ কিছু কারণ দৃশ্যমান। প্রথমত- উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, দ্বিতীয়ত- পেঁয়াজ সংরক্ষণের অভাব, তৃতীয়ত- মৌসুমের শেষ পর্যায় এবং চতুর্থত- বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ক্ষতি হওয়া। সাধারণত, প্রতিবছরে নিদিষ্ট কোনো একটা সময়ে এই কারণগুলোর জন্য পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমূখী দেখা যায়। এবছর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমদানি বন্ধ থাকা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়। নতুন পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত অস্থিরতা চলতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ান।
সরকারের অবস্থান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দেশে পেঁয়াজের সরবরাহে ঘাটতি নেই। বর্তমানে সাড়ে ৩ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। চলতি মাসে আরও ১ লাখ টন নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে এবং আগামী মাসে আসবে ২ লাখ ৫ হাজার টন।
ভারতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে কেজিপ্রতি ৮ রুপিতে (প্রায় ১২ টাকা) নেমেছে। তবে আমদানি করলে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন, আর ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশি কৃষকরা। এ কারণে আপাতত আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বাণিজ্য উপদেষ্টার বক্তব্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে দাম না কমলে আমদানি করা হবে। তবে দাম স্বাভাবিক হলে আর অনুমতি দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, “২ হাজার ৮০০ জন আমদানির আবেদন করেছেন। এর ১০ শতাংশকেও অনুমতি দিলে বাজারে ধস নামবে।”
বিটিটিসির সুপারিশ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) জানিয়েছে, কিছু মধ্যস্বত্বভোগী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করছে। তাদের মতে, সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরতে পারে।



