Logo
Logo
×

অর্থনীতি

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংককে

Icon

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংককে

ছবি-সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংককে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যাদের দৃশ্যমান ব্যবসা নেই, তাদের ঋণ দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি পরিবারের কাছে ব্যাংকগুলোকে তুলে দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা অপরিহার্যতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আলোচকেরা এসব মন্তব্য করেন। তাঁরা আরও বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সুদহার ও ডলারের দাম ঠিক করা হয়েছে। ডলারের ওপর চাপ কমাতে দাম ধরে রাখা হয়েছে, অন্যদিকে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে। এতে খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এসব স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বাংলাদেশের ব্যাংকের শুধু স্বাধীনতা দিলেই হবে না, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। এটা না হলে সেই স্বাধীনতা কার্যকর হবে না।

শেয়ারবাজার, কর ব্যবস্থাপনা উন্নত করার তাগিদ দেন বক্তারা। তাঁরা মনে করেন, তা না হলে পুরো চাপ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর গিয়ে পড়বে।

রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আজ সকালে এই আলোচনা করে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)। পিআরআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ও চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তার সমাপনী বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘২০০৩ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় অর্থনৈতিক সংস্কার করেছিল, তার সুফল দেশ এখনো পাচ্ছেতবে ওইসব উদ্যোগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়নিফলে পূর্ণ সুফল মেলেনিদেশের সমস্যা সমাধানে প্রধান উদ্যোগের একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতাআমাদের সময়ে (বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে) ব্যাংকিং বিভাগ বিলুপ্ত করা হয়েছিলআমরা ক্ষমতায় গেলে আবার তা বিলুপ্ত করা হবে।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কখনো বাংলাদেশ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থায় রাজনৈতিক নিয়োগ দিইনি। বাংলাদেশের ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নয়, সংস্থাটিকে স্বাধীনতা দিতে হবে।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অর্থনীতির সবকিছু অটোমেশন করে ফেলতে হবে। তাহলে দুর্নীতি কমে আসবে। ক্যাশলেস লেনদেনই হলো এখন ভবিষ্যৎ।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে পিআরআইয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ হলো দ্রব্যমূল্যে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা, প্রবৃদ্ধিকে সহায়তার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং আর্থিক খাতে সুশাসন ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। বাজার ব্যবস্থা যদি মনে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশ্বাসযোগ্য বা স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংক কখনো প্রকৃত স্বাধীনতা পায়নি। আমলাদের গভর্নর করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে কয়েকটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সুদহার ও ডলারের দাম ঠিক হয়েছে। ওই সময় দেশ থেকে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা দিতে হবে। সেটা দিতে হবে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও নিয়ন্ত্রণ করার স্বাধীনতা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংক খাতের সব সূচক খারাপ হয়ে পড়েছে। আগে থেকেই আমরা তা জানতাম। অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর বিষয়টি আনুষ্ঠানিক হয়েছে। প্রকৃত চেহারা বের হচ্ছে। এত দিন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবহার করা হয়েছে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসিম মঞ্জুর বলেন, ২০১৯ সাল থেকে আমরা ডলারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে আসছিলাম। সেটা না করে ২০২২ সালে ৪১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যার চাপ সবাইকে নিতে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতির ধারাবাহিকতা থাকা জরুরি।

নাসিম মঞ্জুর আরও বলেন, এখন যারা কর দেয় ও ঋণ পরিশোধ করে, তাদের চাপ নিতে হচ্ছে। আইনের মাধ্যমে যত স্বাধীনতা দেওয়া হোক, কাকে গভর্নর করা হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদের সময় আমরা ভালো পরিবেশ দেখেছি। আইনে যাই হোক, ব্যাংক খাতের উন্নয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বেশি জরুরি।

অনুষ্ঠানের আরও বক্তব্য দেন বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ আখতার হোসেন প্রমুখ।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন