Logo
Logo
×

অর্থনীতি

উৎপাদন বাড়লেও আলু চাষে ৩ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩১ এএম

উৎপাদন বাড়লেও আলু চাষে ৩ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

চলতি বছরে দেশে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পরিমাণে আলু উৎপাদিত হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ টন, যা আগের বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। এতে বাজারে সরবরাহ বেড়ে গিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আলু উদ্বৃত্ত রয়ে গেছে এবং চাষি ও ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ মৌসুমে দেশে ৪ লাখ ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। উৎপাদন বেড়েছে অনুকূল আবহাওয়া ও চাষের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএসএ) তথ্যমতে, ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংগঠনের ৩৩৯টি সদস্য প্রতিষ্ঠানে ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন আলু মজুত ছিল। বাজারে চাহিদা কম থাকায় এসব হিমাগারে এখনো ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আলু সংরক্ষিত রয়েছে।

বৃহত্তর বগুড়া কোল্ড স্টোর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হোসনে আরা বেগম বলেন, এ বছর চাষি ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে বিপুল পরিমাণ আলু রেখেছেন। কিন্তু চাহিদা কম থাকায় বিক্রি হচ্ছে না। আমরা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছি—চাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আলু কিনে টিসিবি ও সরকারি বাহিনীর রেশন হিসেবে বিতরণের জন্য।

অন্যদিকে কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এ বছর উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। তাদের ক্ষতি কমাতে সরকার আলু কেনার উদ্যোগ নেবে।

দেশের তৃতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সীগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে ১০ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬০ হাজার মেট্রিক টন বেশি উৎপাদন হয়েছে। সরকারি হিসাবে, প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়েছে ১৭ টাকা এবং সংরক্ষণসহ মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮ থেকে ১০ টাকায়।

ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, নর্দান কোল্ড স্টোরেজে রেখেছি ১৮ হাজার ৬০০ বস্তা আলু। বর্তমান দামে বিক্রি করলে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকারও বেশি লোকসান হবে।” জয়পুরহাটের ব্যবসায়ী মীর শহীদ জানান, “প্রতি বস্তায় গড়ে ৭০০ টাকা লোকসান হচ্ছে।

এ বছর বীজ আলুর দামও প্রতি কেজিতে প্রায় ৬০ শতাংশ কমেছে। পঞ্চগড়ের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর যে বীজ আলু ৪ হাজার টাকায় কিনেছি, এ বছর তা পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকায়।

বিসিএসএ সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, আলুর দাম উৎপাদন খরচের তুলনায় অনেক কম। হিমাগারে সংরক্ষিত আলু পাইকারি ১৪–১৫ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে না, খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২০–২৫ টাকায়। অথচ খরচ পড়ছে ২৫–২৭ টাকা।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ২০ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ কম।

বিসিএসএ সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে, খাদ্যবান্ধব ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে প্রতিটি পরিবারের জন্য ১০ কেজি করে আলু অন্তর্ভুক্ত করার, যাতে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসান কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যায়।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন