ছবি-সংগৃহীত
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের চেয়ে চীন আরও এগিয়ে গেছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে দুই দেশের মধ্যে ব্যবধান ছিল ৩৮ কোটি ইউরো; জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ কোটি ইউরো। শুধু ব্যবধানেই নয়, প্রবৃদ্ধিতেও বাংলাদেশকে পেছনে ফেলেছে চীন।
রপ্তানিকারকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করার পর দেশটির পোশাক রপ্তানি ধসে পড়ে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে চীনা উদ্যোক্তারা ইইউর বাজারে আগ্রাসীভাবে অর্ডার নিতে শুরু করেন এবং ক্রেতাদের কম দামে অফার দেন। এতে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছেন।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে—
ইইউ মোট আমদানি করেছে: ৪ হাজার ৩৩৯ কোটি ইউরোর পোশাক (বৃদ্ধি ১২.৩%)
চীনের রপ্তানি: ১ হাজার ১২৬ কোটি ইউরো (বৃদ্ধি ২২.৩%)
বাংলাদেশের রপ্তানি: ১ হাজার ২৯ কোটি ইউরো (বৃদ্ধি ১৭.৯%)
তুরস্ক: ৪২৭ কোটি ইউরো (কমেছে ৭%)
ভারত: ২৭০ কোটি ইউরো (বৃদ্ধি ১৫.৪%)
ভিয়েতনাম: ২০২ কোটি ইউরো (বৃদ্ধি ১৭.৩%)
বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানির অর্ধেকের গন্তব্য ইইউ। এই বাজারে শীর্ষ দুই অবস্থানে রয়েছে চীন ও বাংলাদেশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত এপ্রিল থেকে বিভিন্ন দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। আগস্টে কার্যকর হওয়া শুল্কে—
চীনা পণ্যে ৩০%
বাংলাদেশের পণ্যে ২০%
ভারতের পণ্যে ২৫% (শিগগিরই হবে ৫০%)
ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও কোরিয়ার ওপরও বিভিন্ন মাত্রায় শুল্ক আরোপ হয়েছে।
এ কারণে মার্কিন ক্রেতারা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “ইউরোপ আমাদের বড় বাজার হলেও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক পরিস্থিতি যদি অনুকূলে আসে, তাহলে ইইউতে প্রবৃদ্ধি কম হলেও আমরা সামগ্রিকভাবে এগোতে পারব।”
তিনি আরও বলেন, ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই ইইউর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (এফটিএ) করেছে। বাংলাদেশকেও এ ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ, ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর জিএসপি সুবিধা তিন বছর থাকলেও, তার পর জিএসপি প্লাস পাওয়া কঠিন হবে।



