বিগত সরকারের সময়ে ঋণের নামে ব্যাংক লুটপাট হয়েছে : অর্থ উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে ঋণের নামে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। ওই টাকার বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে এবং আদায় না হওয়ায় তা এখন খেলাপি ঋণে পরিণত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সরকারের এক বছরের পূর্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ড. সালেহউদ্দিন এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ড. সালেহউদ্দিন আহমে জানান, নতুন করে আরও ১০১ জন অর্থ পাচারকারী শনাক্ত হয়েছে; প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা করে বিদেশে পাঠিয়েছে। এর আগে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার মামলা করেছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, শুধুমাত্র একটি ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৫ শতাংশ খেলাপি। ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও তার বন্ধুরা সব টাকা নিয়ে চলে গেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত এক বছরের অর্থনীতি পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সব সূচক নেগেটিভ ছিল। এখন সব সূচকই পজিটিভ। সুশাসনের ঘাটতি, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির কারণে আর্থিক খাত খাদের কিনারায় ছিল, সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জুনে তা ৬ শতাংশে নামার আশা, বর্তমানে ৮ শতাংশের বেশি এবং জুলাইয়ে তা ১৪ শতাংশে ছিল। ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য বরাদ্দ যথেষ্ট নয়, তবে আইএমএফ অর্থ প্রদান করবে।
টাকা ফেরত আনার বিষয়ে তিনি বলেন, বড় ধরনের ১১টি মামলা হয়েছে, পাচারের স্থান শনাক্ত করা হয়েছে এবং ১২টি দেশের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএলএ) করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আইনজীবীর মাধ্যমে অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।
কর আহরণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থার ওপর কর আদায় নির্ভর করে। তবুও ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাংক খাত সংস্কার কার্যক্রম উল্টে দিলে আমানতকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা ও মানবসম্পদ ঠিক করা আগামী নির্বাচিত সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।



