ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্সের আবেদন গ্রহণ শুরু করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১১:২৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
আগামী আগস্ট থেকে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য নতুন করে আবেদন গ্রহণ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পূর্বে আবেদন করা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও পুনরায় আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে।
তিনি জানান, আবেদন যাচাইয়ের পর দ্রুতই বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে। লাইসেন্সের নির্দিষ্ট সংখ্যা এখনও চূড়ান্ত নয়, তবে গুণগত মানের ভিত্তিতেই তা নির্ধারিত হবে। “ধাপে ধাপে লাইসেন্স দেওয়া হবে, খুব বেশি নয়,” বলেন গভর্নর।
ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনায় আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সক্ষমতা থাকতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে তিনি উদাহরণ দেন বিকাশের, যার মুনাফা অর্জনে ১২ বছর সময় লেগেছে।
ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি ন্যানো লোন দেওয়ার সক্ষমতা নেই বলে জানিয়ে গভর্নর বলেন, “এর জন্য তাদের পৃথক ডিজিটাল ব্যাংক সাবসিডিয়ারি গঠন করতে হবে অথবা নতুন লাইসেন্স নিতে হবে।”
২০২৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের গাইডলাইন তৈরি করে এবং জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৫২টি আবেদন গ্রহণ করে। এর মধ্যে আটটি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক অনুমোদন পায় এবং দুটি ব্যাংক 'লেটার অভ কনসেন্ট' পায়।
কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিত করে। পরে নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর লাইসেন্স প্রক্রিয়ার পূর্ণ পর্যালোচনা শুরু করেন।
এদিকে, লাইসেন্স প্রাপ্তির অপেক্ষায় থাকা কড়ি ডিজিটালের অন্যতম স্পনসর আনিস এ খান জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় ফি ও নথিপত্র ইতিমধ্যে জমা দিয়েছে। তিনি জানান, ২০০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ৭২ কোটি টাকা বিদেশি প্রযুক্তি সহায়তা হিসেবে আসবে।
তবে ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বব্যাংক। ‘বাংলাদেশ: কান্ট্রি প্রাইভেট সেক্টর ডায়াগনস্টিক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং নীতিগত অস্পষ্টতাই দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রগতির বড় অন্তরায়।
আইএফসি ও এমআইজিএ প্রস্তুতকৃত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকলে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।” প্রতিবেদনে অভিযোগ তোলা হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্বেচ্ছাচারী প্রক্রিয়ায় কিছু আবেদনকারীকে অতিরিক্ত লাইসেন্সের আশ্বাস দিয়েছে এবং অন্যদের জন্য একটি অস্পষ্ট ‘ডিজিটাল ব্যাংকিং উইন্ডো’ খোলা হয়েছে।



