হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ এলেও খেলাপির শ্রেণিকরণ চলবে: গভর্নর
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, খেলাপিকে খেলাপিই বলা উচিত—যদি হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশও আসে, তবু খেলাপিকে শ্রেণিকরণ করা হবে। তাঁর মতে, একজন গ্রাহককে ব্যাংক যতটা জানে, আদালত সে বিশ্লেষণ করতে পারেন না।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিমত প্রকাশ করেন। সাক্ষাৎকারে উঠে আসে গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ব্যাংক খাত পুনর্গঠনে উদ্যোগের চিত্র।
গভর্নর জানান, অর্থঋণ আদালত আইনে পরিবর্তন আসছে। তিনি বলেন, বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় যেভাবে ঋণ আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাত কোনোদিন ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, অনেক ব্যবসায়ী স্টে অর্ডার নিয়ে খেলাপি দায় থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এমনকি অগ্রণী ব্যাংকের একটি ঘটনায় স্থগিতাদেশ থাকার পরেও খেলাপির শ্রেণিকরণ করা হয়েছিল, যার ফলে ওয়ারেন্টও জারি হয়।
আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, ব্যাংকগুলোর সম্পদ ও ঋণের মান বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা গেছে, বিগত আট-নয় বছর ধরে পরিকল্পিতভাবে অনেক ব্যাংক ও নন-ব্যাংক প্রতিষ্ঠান দখল করে সেখান থেকে অর্থ লুট করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এটি যেন একটি ‘হানিপট’ ছিল—একটি মধুর ভাণ্ডার, যেখানে জনগণের গচ্ছিত অর্থের নিরাপত্তার চেয়ে অর্থ লুটের সুযোগকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, এই প্রক্রিয়াগুলো ঘটেছে সরকারের এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখের সামনেই, অথচ তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং বহু ক্ষেত্রে সহায়তাও করেছে।
তিনি দাবি করেন, সিভিল সোসাইটি এবং তিনি নিজেও বহুবার সতর্ক করেছিলেন, বিশেষ করে এক প্রাক্তন গভর্নরকে। তাঁর ভাষায়, কয়েকটি ব্যাংক একসঙ্গে ধসে পড়লে “অ্যাম্বুলেন্সও দরকার হবে।”



