
প্রিন্ট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
জনতা ব্যাংকে ঋণ জালিয়াতি, ৯ গ্রুপের দাপটে আটকে ৬৭ হাজার কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম

ছবি- সংগৃহীত
রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক এখন কার্যত জিম্মি প্রভাবশালী ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর কাছে। বিসমিল্লাহ, বেক্সিমকো, এস আলমসহ দেশের শীর্ষ ৯টি গ্রুপের কাছে আটকে রয়েছে ৫৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ। সর্বমোট খেলাপি ঋণ ছাড়িয়েছে ৬৭ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অভিযোগ উঠেছে, ব্যাংকিং আইন উপেক্ষা করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব গ্রুপকে দেওয়া ঋণ আসলে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির প্রতিচ্ছবি—যা ‘ব্যাংক ডাকাতি’ বলেই বিবেচিত।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একাধিক টিম গত এক দশকে তদন্ত করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বর্তমানে উপ-পরিচালক মো. আল-আমিনের নেতৃত্বে একটি নতুন অনুসন্ধান টিম কাজ শুরু করেছে, যারা জনতা ব্যাংকের ঋণ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই করে নতুন অনিয়ম চিহ্নিত করছে।
সবচেয়ে আলোচিত গ্রুপগুলোর অবস্থান
বেক্সিমকো গ্রুপ: ২৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ, যার বড় অংশ খেলাপির পথে। রপ্তানির আড়ালে প্রায় ৪৫৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও রয়েছে।
বিসমিল্লাহ গ্রুপ: ১২০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, যার মধ্যে জনতা ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকেই ৬০০ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে।
এস আলম গ্রুপ: ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ, যার ১২০০ কোটি টাকার খেলাপি হয়েছে এবং ৭০০ কোটি টাকার বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
এনন টেক্স: ৫৭৬৮ কোটি টাকার ঋণ, যার বড় অংশ ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও বিদেশি কোম্পানি দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ক্রিসেন্ট গ্রুপ: ৫০৪০ কোটি টাকার ঋণ, যার মধ্যে রপ্তানি বিল জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
এছাড়া গ্লোব জনকণ্ঠ, নাসা গ্রুপ, রানাকা, রতনপুর ও সিকদার গ্রুপের বিরুদ্ধেও বড় অঙ্কের খেলাপি ঋণের অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, এখন পৃথকভাবে প্রতিটি অভিযোগ পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং অনুসন্ধান শেষে আইনের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকিং খাতের সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে, যা ভবিষ্যতের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।