Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঈদে বাড়ি ফিরতে সাইকেলে ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি, সহযোগিতার হাত বাড়াল সেনাবাহিনী

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম

ঈদে বাড়ি ফিরতে সাইকেলে ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি, সহযোগিতার হাত বাড়াল সেনাবাহিনী

অরুপ রতন, বগুড়া: কোনো রেকর্ড গড়ার জন্য নয়, নয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার উদ্দেশ্য—ঢাকা থেকে সাইকেলে করে ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার এই গল্পটা এক অসহায় বাবার আত্মত্যাগের।

ছেলে রেজওয়ান ইসলাম যেন মানুষ হয়, লেখাপড়া করে জীবন গড়ে তোলে—এই স্বপ্নে বিভোর গাইবান্ধার রিকশাচালক মো. রাজু। সেই স্বপ্ন পূরণে ছেলের জন্য একটি সাইকেল খুব প্রয়োজন ছিল। নিজের কষ্টার্জিত আয়ে পুরোনো একটি সাইকেল কিনলেও, সেটি ঢাকা থেকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর হরিনাথপুর গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার মতো অর্থ ছিল না তাঁর হাতে।

ঢাকার মহাখালীতে প্রায় দেড় দশক ধরে রিকশা চালান রাজু। তাঁর ছেলে রেজওয়ান মাধ্যমিক পাস করে এখন কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত এক মাস আগে মহাখালী থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় একটি সেকেন্ড হ্যান্ড সাইকেল কিনেন তিনি। কিন্তু সাইকেলটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেরার জন্য বাস ভাড়াসহ দরকার ছিল অন্তত ৩ হাজার টাকা। রাজুর হাতে ছিল মোটে আড়াই হাজার টাকা—যার মধ্যে ঈদের খরচও চালাতে হতো।

শেষমেশ বাবার ভালোবাসাই তাঁকে সাহস জুগিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় সাইকেল নিয়ে মহাখালী থেকে রওনা হন গাইবান্ধার উদ্দেশে। প্রায় ২১ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে পৌঁছান বগুড়ায়। মধ্যরাতে মহাসড়কে একা সাইকেল চালাতে দেখে তাঁকে আটকায় সেনাবাহিনীর একটি তল্লাসিচৌকি। রাজুর অভাবের কথা ও ছেলের জন্য তার প্রচেষ্টা শুনে সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠেন দায়িত্বরত সেনাসদস্যরা।

পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাজুর সাইকেলসহ তাঁকে একটি ট্রাকে তুলে দেন এবং কিছু শুকনো খাবার দিয়ে বাড়ির পথে সহায়তা করেন।

রাজু জানান, “কোনো উপায় না পেয়ে একটি ব্যাগ নিয়ে সাইকেল চালিয়ে রওনা হই। পথে তিনবার ৫০ টাকা করে ভ্যানে করে কিছু দূর গিয়েছি। যমুনা সেতুতে সাইকেল নিয়ে উঠতে দিচ্ছিল না, পরে ১০০ টাকা দিয়ে একটি মিনি ট্রাকে উঠি। কিন্তু ট্রাকটি গাইবান্ধা পর্যন্ত না যাওয়ায় নামিয়ে দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “এভাবে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারব ভাবিনি। জীবনে এমন অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি। তবে ছেলের জন্য সাইকেল উপহার দিতে পারায় আমি খুশি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা না থাকলে হয়তো বাড়ি পৌঁছানোই হতো না। এখন নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারছি, ওনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন