
প্রিন্ট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৩২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
চট্টগ্রামে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর জন্য ইউনিফর্ম তৈরির কাপড় সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুচ ছালামের ভাইসহ তিনজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিল এই আদেশ দেন।
রিমান্ডে নেওয়া তিনজন হলেন—তারিকুল ইসলাম, তৌহিদুল ইসলাম ও আতিকুর রহমান। এর মধ্যে তারিকুল ইসলাম সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালামের ছোট ভাই। বাকি দুজন ওয়েল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ওয়েল কমপোজিট নিট কেমিক্যাল ফেব্রিকস ডাইং’-এর কর্মকর্তা।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন শাখা জানিয়েছে, অভিযুক্তরা তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে কেএনএফের পোশাক তৈরির জন্য কাপড় সরবরাহ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও অন্যান্য জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার রাতে চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় অবস্থিত কারখানায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। একই অভিযানে গ্রেফতার হওয়া জামালুল ইসলামের রিমান্ড চাওয়া হয়নি। চারজনকেই বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
উল্লেখ্য, ১৭ মে রাতে বায়েজিদের ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ নামের একটি পোশাক কারখানায় অভিযান চালিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশ ২০,৩০০ পিস কেএনএফের ইউনিফর্ম জব্দ করে। এ সময় কারখানার মালিক সাহেদুল ইসলামসহ গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দারকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে জানা যায়, ‘মংহলাসিন ওরফে মং’ নামে এক পাহাড়ি যুবক দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্ম তৈরির দায়িত্ব দেন ওই কারখানাকে।
পরবর্তীতে, ২৭ মে ‘নুর ফ্যাশন অ্যান্ড গার্মেন্টস’ নামে আরেকটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে আরও ১৫,০০০ ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়। সেখানে কেএনএফের জন্য ৫০ লাখ টাকার চুক্তিতে পোশাক তৈরি হচ্ছিল বলে জানায় পুলিশ। ওই মামলায় গার্মেন্টস মালিক মতিউর রহমানকে গ্রেফতার করে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এ ছাড়া, সৈয়দা সালেহা পারভীন নামের এক নারী উদ্যোক্তাকেও ছয় দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বহু বছর ধরে সক্রিয়। সংগঠনটি অর্থ সংগ্রহের জন্য অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি এবং ব্যাংক ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সংগঠনের কার্যক্রমে আর্থিক জোগান দিতে এই পোশাক তৈরির কাজ ছিল বলে সন্দেহ করছে গোয়েন্দারা।