
প্রিন্ট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৮ এএম
ময়মনসিংহে আয়মন নদীর সেতু ভেঙে ১০ গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার খেরুয়াজানী ইউনিয়নের পলশা ভিটিবাড়ী গ্রামে আয়মন নদীর ওপর নির্মিত গহুর মোল্লা সেতু ভেঙে পড়েছে। ফলে অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেতুটি ধসে পড়ে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রমকে সেতু ধসের কারণ হিসেবে দায়ী করছেন এলাকাবাসী। তারা জানান, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নদীতে পানির চাপ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত নদী খননের কারণে সেতুর গোড়ার মাটি সরে যায়, যার ফলে হঠাৎ করে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
২০০১ সালে সেতুটি নির্মাণ করে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। তবে সম্প্রতি কোনো ধরনের সংরক্ষণ ছাড়াই নদী খনন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই খননের কারণেই সেতুটি দুর্বল হয়ে যায়।
সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় কলসা, গড়বাজাইল, চাপুড়িয়া ভিটিবাড়ীসহ অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, “এই সেতু দিয়েই আমরা স্কুল, কলেজ, হাটবাজার ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করতাম। এখন বিকল্প কোনো পথ নেই, সবাই বিপাকে পড়েছে।”
আরেক বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, “নদী খননের আগে যদি সেতুর বিষয়টি বিবেচনা করা হতো, তাহলে এই দুর্ভোগ এড়ানো যেত। দ্রুত সেতু মেরামত করতে হবে।”
উপজেলা প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, “আমরা সেতুটি নির্মাণ করেছিলাম। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের খননের কারণে সেতুটি ধসে গেছে। আপাতত যোগাযোগ সচল রাখতে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হবে।”
মুক্তাগাছার ইউএনও মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “সেতু ধসের ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখলাক উল জামিল জানান, “আমরা নদী খননের আগে উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছিলাম সেতুটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে। সেতুর আশপাশের ৩০ মিটার দূরত্ব পর্যন্তও আমরা খনন করিনি। এখন সেতু ধসে পড়লে এর দায়ভার আমাদের ওপর দেওয়া ঠিক নয়।”
স্থানীয়দের দাবি, দোষারোপ না করে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ ও স্থায়ী সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।