
প্রিন্ট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫১ এএম
উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ল কুয়াকাটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ০১:১৪ পিএম

সড়কের পাশের দোকানগুলোও রাস্তার সঙ্গে ধসে পড়েছে।
কুয়াকাটার পর্যটন এলাকায় মেরিন ড্রাইভের আদলে নির্মিত প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি সড়কটি উদ্বোধনের আগেই জোয়ারের তোড়ে ধসে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া প্রবল জোয়ারে জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্বদিকে নির্মাণাধীন দুই কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের একাধিক অংশ সাগরের ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশ বক্স, সরদার মার্কেট, ফুচকা মার্কেটসহ একাধিক স্থাপনা জোয়ারের পানিতে বিলীন হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং পর্যাপ্ত তদারকির অভাবই এই ধসের মূল কারণ। তারা দাবি করেছেন, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পুরো প্রকল্প ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বশার বলেন, সামনে বর্ষাকাল আসছে, তখন সমুদ্র আরও উত্তাল হবে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।
২০২৪ সালে কুয়াকাটা পৌরসভা সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষা ও পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেরিন ড্রাইভ সড়কের আদলে প্রকল্পটি হাতে নেয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তবে শুরু থেকেই নির্মাণের মান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ ছিল।
ঘটনার পর একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদিকে এবং প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর সাড়া পাওয়া যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে ১৬টি জেলায় ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা ছিল। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সরিয়ে নিচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম জানান, পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের পর রাস্তার বাকি বিল দেওয়া হয়নি। তবে বিল ও জামানত জমা আছে। ক্ষতিপূরণ আদায় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, পটুয়াখালীর চারটি উপজেলার ১১টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে ২০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। টানা বৃষ্টিতে পৌর শহরের অধিকাংশ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া, শতাধিক মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।