Logo
Logo
×

সারাদেশ

সামান্য বৃষ্টিতে মহেশখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিতে ডুবে নিহত ১

Icon

কক্সবাজার প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম

সামান্য বৃষ্টিতে মহেশখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিতে ডুবে নিহত ১

ছবি : সামান্য বৃষ্টিতে মহেশখালীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সামান্য বৃষ্টিতে কক্সবাজারের মহেশখালীর উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় (সকাল ৯টা) কক্সবাজারে ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আজ ও কাল ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর পরেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ১-২ দিন  থাকবে।

আর এই বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির তোড়ে প্লাবিত হয় কুতুবজোম, মাতারবাড়ির সাইরার ডেইল, ধলঘাটা ও ছোট মহেশখালীর নিম্নাঞ্চল। লোকালয়ের রাস্তাঘাট, দোকানপাট ও শত শত ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যায়। ভেঙে পড়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সকাল থেকে তীব্রভাবে চলছে লোডশেডিং। এতে লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি করছে। সাগরের উপর ঘনীভূত লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় হঠাৎই জোয়ারের পানি স্বাভাবিক চেয়ে দ্বিগুণ উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছোট মহেশখালীর মূল সড়ক। পানি ঢুকে পড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে। অনেকের সম্পদ পানির তোড়ে ভেসে যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকায় দানু মিয়া (৪২) নামের এক ব্যক্তি জোয়ারের পানিতে ডুবে মারা যান। পরিবার জানায়, দানু মিয়া মৃগী রোগে ভুগছিলেন। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হন। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে কক্সবাজার উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতায় জোয়ার হতে পারে। নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপকূলের নিকটবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে ছোট ট্রলার ও নৌযানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।

সাগরের ঢেউয়ের ধাক্কায় বদরখালী নৌ-চ্যানেলে অবস্থানরত বহু ফিশিং ট্রলারের জাল ছিঁড়ে গেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তারা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য তীরে ফিরে এসেছে। জেলেরা জানান, কয়েকদিনের খরচের জন্য সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন, কিন্তু উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের মুখে পড়ে প্রায় সব জাল ছিঁড়ে গেছে। জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, অনেক জেলে বসে ছেঁড়া জাল মেরামতের কাজে ব্যস্ত। তারা দুর্যোগে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় পড়েছেন।

জালিয়াপাড়া এলাকার সোনা মিয়া জানান, তার শেষ সম্বল ছিলো ঘরটি, সেটিও এখন সাগরে বিলীন হওয়ার পথে। তিনি বলেন, 'নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি পরিবারের সবাইকে নিয়ে। ঘরটি সরিয়ে নেয়ার সামর্থ্য আমার নেই। একই গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, 'বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিবছর এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবার ঘরে পানি ঢুকে সব নষ্ট হয়ে গেছে। তারা জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে সকাল ১১টা থেকে মহেশখালী-কক্সবাজার নৌরুটে সী-ট্রাক চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের সাগর তীরবর্তী এলাকাগুলোর মানুষজনকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া দুর্গত এলাকাগুলোতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেদায়েত উল্যাহ জানান, 'উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, একাধিক বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং দুর্যোগ পরবর্তী সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, 'বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন