
প্রিন্ট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১২:৫০ এএম
কমলনগরে আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ৯

লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ০৫:১৩ পিএম

ছবি : কমলনগরে আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ৯
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে হ্যান্ডকাপসহ আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া কমলনগর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) প্রদীপ চন্দ্র শীলকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রোববার দুপুরে মামলায় গ্রেপ্তারদের লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে শনিবার রাতে পুলিশের কাজে বাধা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫০ জনের বিরুদ্ধে এএসআই প্রদীপ শীল বাদী হয়ে এ মামলা করেন। পরে রাতেই উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের চরঠিকা গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন— চরকাদিরা ইউনিয়নের দক্ষিণ চর কাদিরা গ্রামের ত্রিকোট চন্দ্র দাস, সনজিৎ চন্দ্র দাস, সেম্ভু চন্দ্র দাস, মো. মিলন, আব্দুর রহিম, নুর আলম, আব্বাস উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন ও ইরা দাস।
স্থানীয়রা জানায়, রাজু কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। এএসআই প্রদীপ শনিবার দুপুরে চরঠিকা গ্রাম থেকে রাজুকে আটক করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে তার অনুসারীরা জমায়েত হয়ে পুলিশকে ঘেরাও করে। এ সময় তারা রাজুর পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এক পর্যায়ে রাজুকে পুলিশের হাত থেকে হ্যান্ডকাপসহ ছিনিয়ে নেন তারা। খবর পেয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। সেখানে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়ে তিনি অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পুলিশ ও এজহার সূত্রে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করতে চর কাদিরা ইউনিয়নের অভিযানে যায় পুলিশ। রাজু এর আগের কয়েকটি মামলার আসামী হওয়ায় তখন তার বাড়ির দরজা থেকে তাকে আটক করে হ্যান্ডকাপ পড়ানো হয়। এসময় রাজুর শোর চিৎকারে আশপাশ থেকে তার অনুসারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়। পুলিশকে মারধর করে একপর্যায়ে হ্যান্ডকাপ সহ তারা পুলিশের কাছ থেকে রাজুকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। পরে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কমলনগর থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তাররা সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জড়ো করে রাজুকে গ্রেপ্তারে বাধা সৃষ্টি করেছে। গ্রেপ্তারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া হ্যান্ডকাপসহ আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এএসআই প্রদীপকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (রামগতি সার্কেল) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা রাজুকে আটকের পর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হাত থেকে তাকে হ্যান্ডকাপসহ ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজন হ্যান্ডকাপটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে।