
প্রিন্ট: ১৫ জুন ২০২৫, ০১:৫১ এএম
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
"কাইল আইছিলাম দিছে ফরিক্কা (টেষ্ট), আজগোয়া আবার আইছি ২ ঘণ্টা ধইরা বইয়া রইছি ডাক্তার আইয়ে না"

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ৮ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে হাসপাতাল প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত রোগী আসে সু-চিকিৎসার আশায়। কিন্তু চিকিৎসার বদলে ভোগান্তি বেশি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণের। কেননা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তার আসা যাওয়া করে তাদের মনমত। নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী সময়ে তারা হাসপাতালে আসছেন। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা ডাক্তারের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে রোগীদের। সরকারী নিয়মের নেই কোন বালাই তাদের কাছে। তারা সরকারের চাকুরি করবে কিন্তু সরকারের দেয়া নিয়ম মানতে নারাজ।
জানা যায়, সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডাক্তার আসার সময় সূচি শুরু হয় সকাল ৮টা থেকে। সরকারি হাসপাতাল বলে ডাক্তারের আসা যাওয়ার কোনো রুটিন নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ জনগন। টিকেটের দীর্ঘ লাইনে ঘন্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর আবারও ডাক্তার রুমের সামনে গিয়ে ডাক্তার আসার অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় রোগীদের। কখনো কখনো বেলা ১০.৩০ বাজলেও ডাক্তার শূণ্য থাকে কয়েকটি কক্ষ।
সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের বোর্ডে লেখা রয়েছে অফিস সময়সূচি “সরকারী ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন ব্যাতিত সকাল ৮টা হইতে দুপুর ২.৩০ মিনিট পর্যন্ত, জরুরী বিভাগ সার্বক্ষনিক খোলা”। কিন্তু সকাল ৯.৩০ মিনিটে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ও ডাক্তারের দরজার সামনে বেশ কয়েকজন রোগী বসে আছে। এসময় একজন ডাক্তারও হাসপাতালে আসেনি।
টিকিট কাউন্টারে ডাক্তার আসার সময় জানতে চাইলে তিনি জানান, “ডাক্তার আসবে সকাল ১০ টায়”। টিকিট কাউন্টারের এনায়েতুল্লাহ জানায় ১০ টার পরে ডাক্তার আসে। ডাক্তারের রুমে তালা লাগানো দেখা য়ায়।
তবে কতৃপক্ষ হাসপাতালে কতৃপক্ষ বলছে, ৮ জন্য ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চালানো কঠিন। কখনো কোন ডাক্তার অসুস্থ হয়ে গেলে আসতে দেরি হয়। সকালে রোগি তেমন আসে না।
এর আগে চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে জানান, বাড়ির আশেপাশে সরকারি হাসপাতালটি থাকার কারণে এবং নিজের সুবিধার্থে আমরা এখানেই ডাক্তার দেখাতে আসি। এখানে আসি রোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কিন্তু আরো রোগ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। এমনিতে তো দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেক ক্ষন টিকেটের জন্য। তার উপরে আবার ডাক্তারের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়। সরকারি হাসপাতাল বলে কোনো নিয়ম নেই। ডাক্তাদের যার যেমন সময়ে ইচ্ছে হচ্ছে আসছে আবার যেমন ইচ্ছে চলে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমানের তদারকি নেই বলেই সরকারি হাসপাতালে এসব সম্ভব।
তারুন্দিয়া ইউনিয়নের গাবরবোয়ালী গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রাকিব নামে এক রোগী বলেন, ৮.৩০ মিনিট থেকে ডাক্তারের রুমের সামনে এসে বসে আছি। অনেক দূর থেকে এসে এভাবে লাইন ধরে বসে আছি ডাক্তারের জন্য। এখন প্রায় ১০টা বাজে কিন্তু এখনো ডাক্তার আসার নাম নেই।
পার্শ্ববর্তী উপজেলা গৌরীপুর এর রামগোপালপুর ইউনিয়ন থেকে আসা হাবিব জানান, অত দোড়া থাইকা আইছি। আইয়া বইয়া তাহি ডাক্তরের লাইগ্যা। কাইল আইছিলাম দিছে ফরিক্কা (টেষ্ট), আজগোয়া আবার আইছি। ২ ঘণ্টা ধইরা বইয়া রইছি ডাক্তার আইয়ে না।
এবিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড.সাদিয়া তাসনিম মুনমুন বলেন,হাসপাতালে ডাক্তার সংকট ৮ জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চালানো হচ্ছে।সকালে ৮ ঘটিকায় দিকে রোগি আসে না। তবে ডাক্তারদের সময়মত না আসাটা ঠিক নয়। নিয়ম মেনেই চলা উচিৎ। বিষয়টি নিয়ে আমি ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করবো।