
প্রিন্ট: ১৪ জুন ২০২৫, ১১:২৭ পিএম
ঘুষ ছাড়াই ৯২ জনকে ঠিকাদারি লাইসেন্স দিলেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১০:৪০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তব উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। বুধবার (২১ মে) তিনি ঘুষ ও কোনো ধরনের অতিরিক্ত ব্যয় ছাড়াই ৯২ জন নতুন ঠিকাদারের হাতে জেলা পরিষদের ঠিকাদারি লাইসেন্স তুলে দেন। এতে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা ও সন্তুষ্টির সৃষ্টি হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক আনুষ্ঠানিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক নিজ হাতে লাইসেন্স বিতরণ করেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও জেলা পরিষদের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
মেসার্স আলী ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আলী আজগর বলেন, “৪০ বছরের ঠিকাদারি জীবনে এবারই প্রথম এক পয়সা ঘুষ না দিয়েই লাইসেন্স পেলাম। এমন মানবিক ও সৎ ডিসি এর আগে দেখিনি। আমরা সরকারি নির্ধারিত ফি ৫,৭৫০ টাকা জমা দিয়েই সরাসরি জেলা প্রশাসকের হাত থেকে লাইসেন্স পেয়েছি।”
মেসার্স মুলতাযাম ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মো. রহুল আমিন দিপু বলেন, “ঘুষ ছাড়া সরকারি লাইসেন্স পাওয়া এতদিন যেন কল্পনাতীত ছিল। কিন্তু আজ বাস্তবে দেখলাম—একজন সৎ জেলা প্রশাসক থাকলে কত কিছুই সম্ভব। আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রেও যদি ঘুষ না লাগে, তাহলে প্রকল্পগুলো নির্ধারিত বাজেটেই সঠিকভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।”
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, “রাষ্ট্রের অর্থ আমাদের সবার। এটা অপচয় বা অপব্যবহার হওয়া চলবে না। প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে সৎ থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন আমাদেরকে অনুসরণ করতে পারে—এমন কর্ম রেখে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মাদক আমাদের সমাজে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সবাইকে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। শুধু নিজেরটা ভাবলে হবে না, সমাজ ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে।”
নবনিযুক্ত ঠিকাদারদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, “আপনাদের কাজের গুণগতমান যেন টেকসই ও নির্ভরযোগ্য হয়। সাধারণ জনগণের কল্যাণে কাজ করার মধ্য দিয়েই আপনাদের দায়িত্ব পালিত হবে। মানুষের মাঝে কর্মের মাধ্যমে আজীবন বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন।”
অনুষ্ঠান শেষে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে “গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ” কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃক্ষরোপণ করেন জেলা প্রশাসক ও অতিথিরা।