
প্রিন্ট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০২:২৮ এএম
কমলনগরে একই জমি দু’বার বিক্রি: মসজিদ ও বসতির ওপর প্রতারণার অভিযোগ

রামগতি-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম

কমলনগরে একই জমি দু’বার বিক্রি: মসজিদ ও বসতির ওপর প্রতারণার অভিযোগ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে একই জমি দুই ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে আবু তাহের নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। চরকাদিরা ইউনিয়নের রববাজার এলাকার আতরের জামান সমাজে এই জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে, যেখানে ইতিমধ্যে একটি জুমার মসজিদ ও বসতি গড়ে উঠেছে।
ভুক্তভোগী আতরের জামান— স্থানীয় সেলুন দোকানদার—বৃহস্পতিবার (১৫ মে) কমলনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগ, ২০২০ সালে তিনি আবু তাহেরের কাছ থেকে ৩২ শতাংশ জমি ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় কিনতে বায়না করেন এবং নগদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। নামজারি সম্পন্ন করে পরে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার শর্তে বায়না দলিল হয়। এরপর আতরের জামান ওই জমিতে ১৬ শতাংশ জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করেন এবং বাকি অংশে নিজের বসতি গড়ে তোলেন।
জমির বিক্রেতা আবু তাহের চরফলকন ইউনিয়নের লুধুয়া এলাকার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে।
কিন্তু চলতি বছরের ২২ এপ্রিল আবু তাহের গোপনে নামজারি সম্পন্ন করে ৬ মে একই জমি উচ্চমূল্যে পার্শ্ববর্তী এক মসজিদের ইমাম মাওলানা ইমরান হোসেন রাজুর নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। জমিতে যেতে গেলে রাজু বাধার মুখে পড়েন স্থানীয় মসজিদ কমিটি, মুসল্লি এবং আতরের জামানের পক্ষ থেকে।
স্থানীয়রা দাবি করেন, যুবদল নেতা জয়নাল ইন্ধন দিয়ে মসজিদের ইমাম রাজুকে দিয়ে জমি কিনিয়েছেন। যদিও রাজু দাবি করেন, তার মসজিদের মুসল্লিরা মিলেই জমি কিনে তার নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন এবং তিনি এ বিষয়ে ঝামেলায় জড়াতে চান না।
ভুক্তভোগী আতরের জামান বলেন, আমি একজন গরিব দোকানদার। কষ্ট করে জমি কিনে মসজিদ দিয়েছি। এখন দেখছি, জমি অন্যজনের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এটা কি ইনসাফ?
অন্যদিকে আবু তাহের বলেন, আতরের জামান বাকি টাকা দেয়নি, তাই আমি জমি আরেকজনের কাছে বিক্রি করেছি। এখন আমার কিছুই করার নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিন উদ্দিন বলেন, আবু তাহের প্রতারণা করেছেন। তিনি একবার টাকা নিয়ে বিক্রি করে আবার নতুন করে জমি বিক্রি করেছেন। এতে এলাকায় বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হারুন বলেন, এই ঘটনা স্পষ্ট প্রতারণা। দ্বিতীয়বার যারা জমি কিনেছেন, তারা জেনেশুনেই কিনেছেন, যা অনৈতিক। জমিতে ইতিমধ্যে মসজিদ ও বসতি আছে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ এবং আদালতের বিবেচনাধীন হবে।
ঘটনাটি এখন এলাকাজুড়ে তুমুল আলোচনার বিষয়। সাধারণ মানুষ বলছেন, মসজিদ ও বসতি থাকা জমি নিয়ে এমন প্রতারণা শুধু নৈতিকতাহীনতা নয়, ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিও চরম অবমাননা।