
প্রিন্ট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
বগুড়ায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার কর্মসূচিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:০৫ এএম

ছবি : সংগৃহীত
বগুড়ার সাতমাথা ও শহীদ খোকন পার্ক এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় একটি জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দাবি, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চ’-এর ব্যানারে সংগঠিত হয়ে ছাত্রশিবির ও ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা এই হামলায় জড়িত ছিল। হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে উদীচী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
উদীচীর বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময়, হামলাকারীরা প্রথমে কর্মসূচিতে বাধা দেয় এবং পরে উদীচীর কার্যালয়ে গিয়ে ব্যানার ছিঁড়ে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদ এক বিবৃতিতে জানায়, “জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত কোনো গোষ্ঠীর অনুগ্রহ নয়— এগুলো অর্জিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে। এই হামলা সেই ইতিহাসকেই অপমান করার সামিল।”
উদীচীর সাধারণ সম্পাদক সাহেদুর রহমান বিপ্লব জানান, কর্মসূচির স্থান পরিবর্তন করার পরেও হামলাকারীরা পুলিশ উপস্থিত থাকার পরও তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। “আমাদের অফিসের ব্যানার পর্যন্ত তারা খুলে নিয়েছে,” বলেন তিনি।
এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বগুড়া জেলার সংগঠক আহমেদ সাব্বির স্পষ্টভাবে জানান, “সাতমাথায় অনুষ্ঠিত ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের কর্মসূচির সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই।”
তবে হামলার জন্য অভিযুক্ত ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চের কারো কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মঈনুদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “সাতমাথা মোড়ে একটি কর্মসূচিতে সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। তবে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বড় ধরনের অঘটন এড়ানো সম্ভব হয়।”
বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতোয়ার রহমান জানান, উদীচীর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে খোকন পার্কে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আয়োজন হয়েছিল। সেখানে একই সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও। পরে উদীচীর কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে। তাদের ভাষ্য, এই হামলা শুধু একটি সংগঠনের ওপর নয়, বরং জাতীয় ইতিহাস ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিন্দা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হামলার প্রকৃত পটভূমি ও দায়ীদের বিষয়ে সঠিক তদন্তের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।